নির্যাতিতার মা, বাবার উপর হামলার ঘটনায় তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। এবার এই নিয়ে তদন্তের দাবি করলেন বারাসাতের তৃণমূল বিধায়ক চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী। বলেন, 'কে করেছে বোঝা যাচ্ছে না। আগে খতিয়ে দেখা হোক, তারপর বলা যাবে। তবে যাঁরা ওঁকে নিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁদের আগলে রাখা উচিত ছিল। কে কাকে মেরেছে বলতে পারব না। আমি খুবই দুঃখিত, মর্মাহত। আর একটা কথা, এর সমাধান হতেই হবে।' এরপর তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, 'আপনার কি মনে হয়, দোষীরা ধরা পড়েনি?' সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'না,মনে হয় না তো। আমারও মনে হয় না। সবারই মনে হয় না। সিবিআই চোখ বন্ধ করে আছে। কেন্দ্রীয় সরকার কী করছে?'
এদিকে তৃণমূলের কুণাল ঘোষের অভিযোগ, এই ঘটনার নেপথ্যে বিজেপির পরিকল্পনা রয়েছে। তাঁর দাবি, 'এতদিন ধরে ওঁরা (নির্যাতিতার মা, বাবা) বহু মিটিং-মিছিলে গিয়েছেন। হঠাৎ বিজেপির মিছিলে গিয়েই আহত হলেন কেন! কাল আপনারা দেখেছেন, বিজেপির ওই ন্যাড়া নাড়ু ধাক্কা মারছে ছবি তোলার জন্য, নির্যাতিতার মাকে ধাক্কা মারছে নিজের মুখ দেখাবে বলে। কোনও ছবি পাওয়া যায়নি যে, কোনও পুলিশ অভদ্রতা করেছেন বা আঘাত করেছেন।'
অন্যদিকে, নিহত চিকিৎসকের মা সরাসরি পুলিশের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর কথায়, 'আমায় মেরেছে। কপালে মেরেছে। অনেক পুলিশ মিলে রাস্তায় ফেলে মেরেছে।' তিনি দাবি করেন, কর্মস্থলে ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রাণ হারানো মেয়ের জন্য বিচার চাইতে গিয়েই আক্রান্ত হতে হয়েছে তাঁদের। গতকাল নির্যাতিতার মায়ের মাথায় গুরুতর চোট লাগে। শাঁখাও ভেঙে যায় বলে অভিযোগ তোলেন তিনি।
শনিবার নির্যাতিতার মা, বাবা নবান্ন অভিযানের ডাক দেন। অভিযোগ, কিছুটা পথ এগোতেই তাঁদের মারধর করা হয়। এরপর আহত অবস্থায় নির্যাতিতার মাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রবিবার সেখানেই নিহত চিকিৎসকের বাবা ফের পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, 'আমাকেও ধরেছিল, কিন্তু আমাকে ধরে রাখতে পারেনি। আমার হাত, জামা, কাপড় দেখুন, জুতোর অবস্থা দেখুন, সব ছিঁড়ে ফেলেছে। জনসংখ্যার থেকে অনেক বেশি পুলিশ ছিল। মহিলা পুলিশ স্ত্রীকে টেনে নিয়ে গিয়ে মেরেছে।'
এই ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার। তবে রাজনৈতিক দোষারোপ থামছে না। তৃণমূল বিজেপির দিকে আঙুল তুলছে, আর বিজেপি পাল্টা অভিযোগ করছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
নির্যাতিতার মা কীভাবে আহত হলেন, তা নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। একদিকে নিহত চিকিৎসকের পরিবারের ক্ষোভ, অন্যদিকে রাজনৈতিক মহলের পারস্পরিক অভিযোগ, সব মিলিয়ে আর জি কর কাণ্ডকে কেন্দ্র করে, নতুন করে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি।