গঙ্গায় ভেসে আসছে কোভিড দেহ? এই আশঙ্কায় রাজ্যের জনসাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের সরবরাহ করা পানীয় জল ব্যবহার কার্যত বন্ধ করে দিয়েছেন মালদহ জেলার গ্রামীণ এলাকার কয়েক লক্ষ মানুষ।
ট্যাপকলের সরকারি জল নিচ্ছেন না কেউ। আতঙ্ক একটাই, উত্তরপ্রদেশ ও বিহার থেকে কোভিড আক্রান্তদের মৃতদেহ ভেসে আসছে গঙ্গায়। আর এই গঙ্গা নদী থেকেই জল উত্তোলন করে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে পরিশোধনের পর পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা হচ্ছে।
মালদহ জেলায় জল সরবরাহের এই ধরণের সরকারি প্ল্যান্ট বেশ কয়েকটি রয়েছে। মালদহের মানিকচকের কাহালা এলাকার প্ল্যান্ট থেকে পানীয় জল-সরবরাহ করা হয় মানিকচক, রতুয়া ও ইংলিশবাজারের অন্তত শতাধিক গ্রামে। বৈষ্ণবনগরের দরিয়াপুরেও আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জলের একটি বড় প্ল্যান্ট রয়েছে। কালিয়াচক, বৈষ্ণবনগর ও মোথাবাড়ি এলাকার অন্তত আট লক্ষ মানুষ দরিয়াপুর প্ল্যান্টের জল ব্যাবহার করেন। কিন্তু এখানেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কালিয়াচকের সুজাপুর এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবী বিশু শেখ বলেন, "চারদিক থেকে শুনছি, গঙ্গায় নাকি উত্তরপ্রদেশ থেকে কোভিডে মৃতদের দেহ ভেসে আসছে। গঙ্গার সেই জল তুলেই দরিয়াপুর প্লান্টে পরিশোধনের পর আমাদের গোটা এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে। কোভিড দেহ গঙ্গায় ভাসানো হয়েছে ভেবে সেই জল এলাকার কেউ পান করছেন না। ব্যবহার করছেন না। এখন কি করব আমরা, বুঝতে পারছি না।"
এনিয়ে মানিকচকের বিডিও জয় আমেদ জানান, এই ধরনের কোনও প্রচার আমাদের তরফে করা হয়নি। মানিকচকের এক বুদ্ধিজীবী বলেন, "গঙ্গায় কোভিড দেহ ভেসে আসছে, এই খবরটা সোশ্যাল মিডিয়ায় চাউর হয়ে গিয়েছে। তা থেকেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে।" মালদহে জনসাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের সরবরাহ করা পানীয় জল ব্যবহার করা যে এভাবে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাবে তা কখনও ভাবেননি জেলা প্রশাসনের কর্তারাও।
জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, "জনগণকে সতর্ক করতে এলাকায় মাইক প্রচার করা হবে। সরকারি পানীয় জলে কোনও সমস্যা নেই।"
তবে এই সমস্ত এলাকার মানুষজন প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, যদি প্রশাসনের তরফ থেকে এই ধরনের মাইকিং করা হয়, তাহলে যে বা যারা এই আতঙ্ক তৈরীর পেছনে রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন ?