রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে মন্ত্রিসভা থেকে সরানোর সুপারিশ করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। গত ৩০ মার্চ মালদহের গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠন ‘ওয়েবকুপা’র সভা ডাকা হয়েছিল, যার সভাপতিত্ব করেছিলেন ব্রাত্য। ওই সভাতেই নির্বাচনী বিধি ভাঙা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যপাল। তার জেরেই ব্রাত্যকে পদ থেকে সরানো এবং তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের সুপারিশ করেছেন তিনি। এই দাবিকে অবশ্য পাল্টা হাস্যকর বলে দাবি করেছেন ব্রাত্য বসু। তাঁর অভিযোগ, কোনও নির্বাচনী বিধিভঙ্গ হলে নির্বাচন কমিশনের অভিযোগ জানানো উচিত ছিল। রাজ্যপালের নয়।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে,রাজ্যপাল এদিন ব্রাত্য বসুকে সরানোর সুপারিশ জানিয়েছে। আসলে বৃহস্পতিবার সকালে রাজভবনের এক্স হ্যান্ডল থেকে একটি পোস্ট করা হয়। তাতে লেখা ছিল, শিক্ষামন্ত্রীর জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজ্যপালের সম্পর্ক নষ্ট হয়েছে। পরে অবশ্য রাজভবনের পোস্টটি মুছে দেওয়া হয়। কিন্তু সেই পোস্টটি মোছার আগেই পিটিআই তাদের পোস্টটি শেয়ার করেছিল। তারা আর মুছে দেয়নি।
এই সুপারিশ প্রসঙ্গে পরে আবার ব্রাত্য এক্স হ্যান্ডেলে আর একটি পোস্ট করেন। তাতে লেখা, ‘‘আমি দেশের রাষ্ট্রপতির কাছে যদি রাজ্যপালকে সরানোর সুপারিশ করতাম, তা হলে সেটা যেমন হাস্যকর হত, এটাও ঠিক তেমনই হাস্যকর। আমি কোনও নির্বাচনী বিধিভঙ্গ করে থাকলে তা নির্বাচন কমিশনের নজরে আনার অধিকার রয়েছে যে কোনও রাজনৈতিক দলের। কিন্তু রাজ্যপাল এমন একটি অভিযোগ তুলে নিজের সাংবিধানিক পদের অপব্যবহার করেছেন এবং নিজের রাজনৈতিক পরিচয়ও প্রকাশ্যে এনে ফেলেছেন। দ্বিতীয়ত, ভারতের সংবিধান অনুযায়ী কোনও রাজ্যের মন্ত্রীর অপসারণ বা নিয়োগের সুপারিশ করতে পারেন একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যপাল শুধু নিজের আসল রংই দেখালেন না, নিজের সাংবিধানিক সীমাও লঙ্ঘন করলেন।’’
একাধিক ইস্যুতে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের আবহ দীর্ঘদিন ধরেই দেখা গিয়েছে। পরবর্তীকালে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাজ্যপালের মতান্তরের ঘটনাও সামনে আসে। এরইমধ্যে আবার গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপার কনভেনশন হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি আবার ওয়েবকুপার সভাপতিও। বিরোধীদের দাবি ছিল, এটা আদর্শ আচরণবিধির পরিপন্থী।