
বঙ্গোপসাগরের আবহাওয়ায় পরিবর্তনের ইঙ্গিত। আগামী সপ্তাহেই দক্ষিণ আন্দামান সাগর এবং উপসাগরের দক্ষিণ দিকের জলভাগে ঘূর্ণিঝড় তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে বলে সতর্ক করল ভারতীয় আবহাওয়া দফতর (IMD)। আবহাওয়া দফতরের স্পেশাল বুলেটিন অনুযায়ী, সোমবার, ২৪ নভেম্বরের মধ্যে একটি গভীর নিম্নচাপ গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়াবিদদের মতে, মালাক্কা প্রণালীর মধ্যভাগের উপরের বায়ুমণ্ডলে যে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫.৮ কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত। সেই সিস্টেম থেকেই এই সম্ভাব্য নিম্নচাপের জন্ম। ইতিমধ্যেই সেটি পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিমদিকে সরে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের দিকে শক্তি বাড়িয়ে এগোচ্ছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
শনিবার ভোর ৩টা ইউটিসি-তে INSAT-3DS স্যাটেলাইটের ছবিতে দেখা গিয়েছে, দক্ষিণ আন্দামান সাগর এবং দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে ছড়িয়ে রয়েছে নিম্ন ও মধ্যস্তরের মেঘ। তার মধ্যেই অসংখ্য শক্তিশালী বজ্রগর্ভ মেঘের উপস্থিতি ধরা পড়েছে। কেন্দ্রীয় বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে তীব্র বজ্রপাত হচ্ছে বলেও তথ্য দিয়েছে IMD।
তবে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ পাওয়ার সম্ভাবনা এখনও কম বলেই জানিয়েছে দফতর। তাদের ‘Cyclogenesis Probability Chart’ অনুযায়ী, প্রথম ৪৮ ঘণ্টায় গভীর নিম্নচাপের সম্ভাবনা নেই। ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টায় সম্ভাবনা কম। তবে ১৪৪ থেকে ১৬৮ ঘণ্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা মাঝারি হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ভুবনেশ্বর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা মনোরমা মোহান্তি বলেন, “এখনও পর্যন্ত আমরা কেবল গভীর নিম্নচাপের পূর্বাভাস দিয়েছি। নিম্নচাপ তৈরি হলে ২২ নভেম্বরের পর বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।”
আবহাওয়ার এই সম্ভাব্য রূপান্তরে চিন্তায় পড়েছেন ওডিশার উপকূলবর্তী কৃষকেরা। কারণ, খরিফ মৌসুমের ধান এখন প্রায় পুরোপুরি পেকে গিয়েছে। নয়া বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় অনেকেই আগেভাগে ধান কাটার কাজে নেমে পড়েছেন। যদিও রাজ্য কৃষি দফতর এখনও কোনও সতর্কবার্তা জারি করেনি বলে জানা গিয়েছে।
বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণাবর্ত কি শেষ পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে? তাকিয়ে দেশজুড়ে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।