
অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’ মঙ্গলবার গভীর রাতে অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলে আছড়ে পড়ার পর ধীরে ধীরে দুর্বল হচ্ছে। ভারতের আবহাওয়া দফতর (IMD) জানিয়েছে, কাকিনাড়ার কাছাকাছি মছলিপত্তনম ও কলিঙ্গপত্তনমের মধ্যবর্তী উপকূল অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়টি ভূমিতে আঘাত হানে। প্রায় তিন থেকে চার ঘণ্টা ধরে চলে তার তাণ্ডব, যেখানে বাতাসের গতি ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছায়। অন্ধ্রপ্রদেশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। রাজ্যে জারি করা হয়েছে ‘হাই অ্যালার্ট’।
তবে ‘মন্থা’ বর্তমানে শক্তি হারিয়ে একটি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। তবু এর পরোক্ষ প্রভাবে রাজ্যের একাধিক জেলায় বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির সতর্কতা
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় বুধবার বজ্রবিদ্যুৎ-সহ মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম জেলায় ৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। এই জেলাগুলিতে জারি করা হয়েছে হলুদ সতর্কতা (Yellow Alert)।
বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া, বীরভূম, পশ্চিম বর্ধমান এবং মুর্শিদাবাদ জেলাতেও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এই সময় ঘন্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বইতে পারে। আইএমডি জানিয়েছে, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টি চলবে।
উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি বাড়ার আশঙ্কা
উত্তরবঙ্গেও বৃষ্টি বাড়বে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। বুধবার জলপাইগুড়ি, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর ও মালদহে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির জন্য হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে দার্জিলিং, কালিম্পং, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়িতে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কিছু জায়গায় বৃষ্টির পরিমাণ ২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা।
সমুদ্র উত্তাল, মৎস্যজীবীদের জন্য নিষেধাজ্ঞা
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দক্ষিণ ও মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সমুদ্র অত্যন্ত উত্তাল হয়ে উঠেছে। রাজ্য প্রশাসন জানিয়েছে, মঙ্গলবারের মধ্যে উপকূলবর্তী এলাকা থেকে মৎস্যজীবীদের ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সমুদ্রে যাওয়ায় সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।