সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী বকেয়া ডিএ মেটানোর সময়সীমা প্রায় পার হতে চলেছে। ২৭ জুনের মধ্যে ডিএ-র বকেয়া সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করতে পারলে আদালত অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত হতে পারে রাজ্য। আগামিকালই সুপ্রিম কোর্টের বেঁধে দেওয়া ছ'সপ্তাহের সময়সীমা শেষ হচ্ছে। এরপর কী হবে? রাজ্যের সরকারি কর্মীরা কি তবে ডিএ পাবেন না? সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করার পর কী ঘটতে পারে?
বুধবার ষষ্ঠ বেতন কমিশনের রিপোর্ট পেশ করেছেন অভিরূপ সরকারের নেতৃত্বাধীন কমিশন। তাতে বলা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারি বেতন কমিশন মেনেই রাজ্যকে একই হারে ডিএ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। এ প্রসঙ্গে সরকারি কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীল বলেন, "ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ এমনটাই করা হবে, আমরা আগেই আশঙ্কা করেছিলাম। যাতে ডিএ দেওয়ার অধিকার, অর্থাৎ হাইকোর্ট থেকে যা বলা হয়েছিল, তা অমান্য করতেই সুপারিশটি তৈরি করা হয়েছে। এর মানে সরকারের যখন আর্থিক সঙ্কুলন হবে তখন দেবে। ডিএ-র যে অধিকার তা সম্পূর্ণ নস্যাৎ করতেই এই সুপারিশ। আমাদের ধারণা সুপ্রিম কোর্ট যদি ডিএ অধিকারের মান্যতা দেয় তাহলে ষষ্ঠ কমিশনের কোনও মূল্য থাকবে না।"
কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, "ষষ্ঠ বেতন কমিশনের পর বাড়ি ভাড়া ভাতা কমিয়ে ১২ শতাংশ করা হতে পারে বলে সুপারিশ করেন। কোনওদিন কমে না, বাড়ে। আমরা আশঙ্কা করছি এবার আমাদের বেতনও কি কমে যেতে চলেছে? আমাদের সর্বনাশ করছেন অভিরূপ সরকারবাবু। ২৭ জুনের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না হলে মুখ্যসচিব ও অর্থসচিবকে যদি সর্বোচ্চ আদালত জেল কাস্টডিতে ভরে দেন এ তো আমাদেরও অপমান। তাই বলছি, ডিএ দেওয়া হোক সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ মেনে।"
কালকের মধ্যে ডিএ বিজ্ঞপ্তি না এলে কী হবে?
আজ ও কাল ২৭ জুনের মধ্যে ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে ঘোষণা না এলে ২৮ তারিখে মুখ্যসচিব ও অর্থসচিবকে ই-মেল করে নোটিস পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন ডিএ আন্দোলনকারীরা। এক্ষেত্রে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে হলেও সরকার ডিএ দেওয়ার পরিকল্পনা করে কিনা তা দেখার।
গত ১৬ মে বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ দিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ। রাজ্যের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি বলেছিলেন, এটা বিপুল পরিমাণ টাকা। এই টাকা দিতে হলে রাজ্য সরকারের কোমর ভেঙে যাবে। রাজ্যের তরফে আরও জানানো হয় যে, ডিএ পাওয়া কোনও অধিকার নয়। সাংবিধানিক অধিকার নয়। সম্ভব নয় এটা। এর পাল্টা শীর্ষ আদালত জানায় যে, বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ দিতে হবে। মামলার পরবর্তী শুনানির দিন অগাস্ট মাসে ধার্য করা হবে বলেও জানান বিচারপতি সঞ্জয় করোল। মামলার পরবর্তী শুনানির দিন অগাস্ট মাসে ধার্য করা হতে পারে বলেও জানান বিচারপতি সঞ্জয় করোল।