অভিনেত্রী মৌসুমী ভট্টাচার্যের ভিডিও নিয়ে কুণাল ঘোষের একটি পোস্ট, সেটি রিপোস্ট করে 'কটুক্তি' তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্যের। তারপরই নেটিজেনদের সমালোচনার মুখে পড়তে হয় কুণাল-দেবাংশুকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় দুই তৃণমূল নেতার রসিকতায় ক্ষুব্ধ হন নেটিজেনরা। টলিপাড়ার অভিনেতা-অভিনেত্রীদের আক্রমণের মুখেও পড়তে হয় তাঁদের। চাপের মুখে পোস্ট এডিট করতে হয় দেবাংশুকে। তবে এখানেই শেষ নয়। মৌসুমীর পর এক এক করে টলিপাড়ার অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নাম করে করে পাল্টা আক্রমণ করেন দেবাংশু।
অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, বিদীপ্তা চক্রবর্তী, শ্রীলেখা মিত্র, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, সুদীপ্তা চক্রবর্তী, দেবলীনা দত্তকে আলাদা আলাদা করে নাম নিয়ে নিশানা করেন দেবাংশু। তিনি বলেন, "কোথায় দেবলীনা দেবী, এই যে বলল গণধোলাই, বিজেপি সুলভ মব লিঞ্চিংয়ের ভাষা ব্যবহার হল কই আপনাকে তো সতীর্থের বিরুদ্ধে কোনও শব্দ খরচ করতে দেখলাম না? আপনার টাইমলাইনে তো একটাও পোস্ট দেখলাম না। আপনার সতীর্থ, মব লিঞ্চিংয়ের হুমকি দিচ্ছেন, গণপিটুনির জন্য মানুষকে উস্কাচ্ছেন, চিকিৎসকদের উনি উস্কাচ্ছেন তা নিয়ে প্রতিবাদ করার কথা ভাবলেন না?"
পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে দেবাংশু বলেন, "আমার প্রিয় তিন অভিনেতাদের একজন , "পরমদা, যেটা শুনলেন, ওটা রাজনৈতিক ভূমিকার বিরুদ্ধে কথা বলা? এই পোস্ট আপনার লেখা তো? কেউ আপনাকে পোস্টটা টাইপ করে দেয়নি তো? নাকি আপনারা ফোমো রোগে ভুগছেন?"
শ্রীলেখার একটি ভাইরাল অডিও ক্লিপ শেয়ার করে যুব তৃণমূল নেতার প্রশ্ন, "আপনি আপনার সহঅভিনেত্রীকে যে ভাষা ব্যবহার করলেন, ঋতুপর্ণার ঋতুটা বদলে দিলেন... এর অর্থ কি বলুন তো?" এখানেই শেষ নয়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, "আপনাদের সিনিয়র সহকর্মী ঋতুপর্ণাকে শ্রীলেখার ভাষাটি কি ভদ্র? আপনারা কতজন এর বিরুদ্ধে বলেছিলেন?"
দেবাংশুর পোস্ট করা ভিডিওতে শ্রীলেখা, স্বস্তিকা, দেবলীনা দত্তদের আক্রমণ-
তীব্রভাবে ক্ষোভপ্রকাশ করে যুবনেতা আরও বলেন, "আপনাদের মৌসুমীদেবীর ভিডিওটির পর আমার আর কুণাল দার উচিত ছিল এর বিরুদ্ধে এফআইআর করা। ভারতীয় সংবিধানে এতে এফআইআর হয়, জেলে ঢোকানো উচিত ছিল, অন্তত পুলিশকে অনুরোধ করা যে আমরা লাইফ থ্রেট অনুভব করছি। আমরা তাতে হাসি মজার মধ্যে দিয়ে ব্যাপারটি কাটিয়ে দিয়েছি, তাতেই আপনাদের এত কষ্ট? আর শ্রীলেখাদেবী আপনি তো ছদ্ম সিপিএম, আপনার পোস্টটা আমি পড়তামও না।"
দেবাংশুকে নিয়ে স্বস্তিকার পোস্টের মন্তব্যে যুবনেতা বলেন, "আমরা ঠাট্টা করেছি, আর উনি চিকিৎসা না দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন শুনেছেন তো? কাউকে তো দেকলাম না মৌসুমীদেবীর ওই ভিডিও নিয়ে বিরোধিতা করতে?" স্বস্তিকাদেবী আপনার তো অভিজ্ঞতা আছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রণাম করেছিলেন তখন সিপিএম কী বলেছিল মনে আছে তো? কারণ কি মৌসুমী দেবী সিপিএমের সঙ্গে যুক্ত, আপনারা সিপিএমের ট্রোল আর্মিকে ভয় পান?
প্রসঙ্গত, স্বাস্থ্য ভবনের সামনে চিকিৎসকদের ধর্নায় একটি ইউটিউব চ্যানেলকে মৌসুমী ভট্টাচার্য বলেন,'কুণাল ঘোষ একটা পাগল। উনি আরও পাগলামি করবে সেটা বোঝা যাচ্ছে। যার জন্য কলতানকে ধরে নিয়ে যাওয়া হল। কোনও যুক্তি নেই। এদের একটাই শাস্তি গণধোলাই। এই কুণাল ঘোষ, আর এই ছেলেটার নামও ভুলে যাই দেবাংশু...যে দিন পাবলিক হাতে পাবে, সে দিন কে ওদের বাঁচাবে আমি দেখব… মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু ওদের বাঁচাতে আসবেন না'। ওই ভিডিওয় দেবাংশুকে যোগ করে কুণাল কটাক্ষ করেন,'হ্যাঁরে দেবাংশু, তোর পাত্রী দেখার কাজটা এগোব?' তার পাল্টা অভিনেত্রীর মৌসুমীর পেশা এবং মুখ নিয়ে ব্যঙ্গ করেন দেবাংশু।