বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ রামনবমী উপলক্ষে অস্ত্রসহ মিছিলের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে মন্তব্য করেছেন, যা রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক তৈরি করেছে। তিনি পুলিশের ওপর ভরসা না থাকার কথা উল্লেখ করে বলেন, নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হিন্দুদের অস্ত্র নিয়ে মিছিলে অংশ নেওয়া উচিত।
দিলীপ ঘোষের বক্তব্য অনুযায়ী, মহরমে যদি অস্ত্রসহ মিছিল হতে পারে, তবে রামনবমীতেও তা হওয়া উচিত। তিনি বলেন, "আমাদের সব দেব-দেবীদের হাতে অস্ত্র রয়েছে। মিছিলের সুরক্ষার জন্যই অস্ত্র নিয়ে বেরনোর দরকার আছে কারণ পুলিশের ওপর ভরসা নেই।" তিনি আরও উল্লেখ করেন, পুলিশের নিজেদেরই সুরক্ষা নেই, তারা কীভাবে অন্যদের সুরক্ষা দেবে। এই প্রসঙ্গে তিনি মালদহের মোথাবাড়ির ঘটনার কথাও তুলে ধরেন।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যকে সমর্থন করেছেন। তিনি বলেন, "পুলিশ মিছিলের অনুমতি না দিলে হয় আদালতের অনুমতি নিতে হবে, না হলে প্রতিরোধ করতে হবে।" রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) পক্ষ থেকেও এই বিষয়ে সায় দেওয়া হয়েছে। আরএসএসের পূর্বাঞ্চলীয় ক্ষেত্র প্রচার-প্রমুখ জিষ্ণু বসু বলেন, "রামনবমীতে অস্ত্র নিয়ে মিছিল হতেই পারে। মহরমেও তো হয়। তবে এটা আইনশৃঙ্খলার বিষয়। পুলিশ প্রশাসন যদি মনে করে মহরমে অস্ত্র নিয়ে মিছিল করলে কোথাও কোনও অশান্তি হবে না, তা হলে রামনবমীতেও অনুমতি দেবে।"
তবে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে বলেন, "হিন্দুদের রামনবমীর ইতিহাস যুগ-যুগান্তরের। আরএসএস বা বিজেপির কাছ থেকে তার উদযাপন শিখতে হবে না। বিজেপি ও আরএসএসের কিছু ভুঁইফোঁড় প্ররোচনা তৈরি করতে চাইছে। তবে বাংলার মানুষ তাতে পা দেবেন না।"
পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, রামনবমীর আগে পোস্টার-প্ল্যাকার্ড লাগিয়ে হিংসা ছড়ানোর ছক রয়েছে বেশ কিছু সংগঠনের। তাই সবাইকে প্ররোচনায় পা না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। আগামী ১০ দিনকে খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে চিহ্নিত করে সব জেলায় সতর্কতামূলক বার্তা পাঠানো হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্ররোচনামূলক পোস্ট না দেওয়ারও অনুরোধ করা হয়েছে।