রাজ্য সরকারের ৫ কর্মীর বিরুদ্ধে FIR দায়েরের সুপারিশ করেছিলেন নির্বাচন কমিশন। সেই সুপারিশ উপেক্ষা করল রাজ্য সরকার। সোমবার দুপুর তিনটের মধ্যে রাজ্য সরকারের ৪ অফিসার এবং এক কর্মীর বিরুদ্ধে FIR দায়ের ও সাসপেন্ডের সুপারিশ করেছিল কমিশন। কিন্তু এদিন নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও রাজ্যের তরফে সেই পদক্ষেপ করা হয়নি। বরং পাল্টা চিঠি দিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব।
এফআইআর নয়, সাসপেনশনও নয়
কাউকেই সাসপেন্ড করা হয়নি। কারও বিরুদ্ধে এফআইআরও দায়ের হয়নি। পাঁচ আধিকারিকের মধ্যে কেবল দু’জনকে নির্বাচন কমিশনের কাজ থেকে আপাতত সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকিরা তাঁদের পদেই বহাল রয়েছেন।
কমিশনের অভিযোগ
কমিশনের দাবি, 'ভূতুড়ে ভোটার' কাণ্ডের তদন্তে এই ৫ আধিকারিকের নাম উঠে এসেছে। অভিযোগ, দুর্নীতির মাধ্যমে বাস্তবে যাঁদের অস্তিত্ব নেই, তাঁদের নামও তোলা হয়েছে ভোটার তালিকায়।
যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে কমিশন অভিযোগ এনেছে, তাঁরা হলেন বারুইপুর পূর্ব কেন্দ্রের ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ERO) দেবোত্তম দত্ত চৌধুরী, ওই কেন্দ্রের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (AERO) তথাগত মণ্ডল, ময়নার ইআরও বিপ্লব সরকার এবং সেই কেন্দ্রের এএআরও সুদীপ্ত দাস। পাশাপাশি, ডেটা এন্ট্রি অপারেটর সুরজিৎ হালদারের বিরুদ্ধেও এফআইআরের নির্দেশ দিয়েছিল কমিশন।
কমিশনের পরপর চিঠি
এই একবারই নয়। তিনবার চিঠি দেওয়া হয়েছিল মুখ্যসচিবকে। প্রতিবারই জানানো হয়েছিল, এই পাঁচজনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। শেষবার সোমবার দুপুর ৩টে পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়।
রাজ্যের জবাব
এদিন সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পর রাজ্যের তরফে কমিশনকে চিঠি দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়, এএআরও সুদীপ্ত দাস এবং ডেটা এন্ট্রি অপারেটর সুরজিৎ হালদারকে কমিশনের কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, বাকি তিনজনের ক্ষেত্রে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
শাসক শিবির সূত্রের খবর, প্রশাসনিক পদক্ষেপের আগে সব দিক খতিয়ে দেখা জরুরি। সেই কারণেই রাজ্য সরকার তড়িঘড়ি পাঁচ কর্মীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে নারাজ। তাছাড়া কমিশনের প্রস্তাব আসে মানেই যে তা অবিলম্বে কার্যকর করতে হবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই রাজ্য সরকারের।
রাজ্যের এই অবস্থানের পর নির্বাচন কমিশন কী পদক্ষেপ নেয় এখন সেটাই দেখার।