পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামে বহুরূপীর বেশে এসে এক কিশোরী ও এক গৃহবধূকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে উত্তেজনা ছড়াল। অভিযোগ, বোলপুরের ৪৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি তাড়কা রাক্ষসীর ছদ্মবেশে এসে এই ঘটনা ঘটান। ঘটনাস্থলে উপস্থিত গ্রামবাসীরা তাকে আটকে রেখে মারধর করেন এবং পরে আউশগ্রাম থানার পুলিশের হাতে অভিযুক্তকে তুলে দেন। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকালে তাড়কা রাক্ষসীর ছদ্মবেশে অভিযুক্ত ব্যক্তি গ্রামে সাহায্য চাইতে আসে। তবে গ্রামবাসীদের অধিকাংশই মাঠে কৃষিকাজে ব্যস্ত ছিলেন, ফলে তিনি গ্রামে আরও অবাধে চলাফেরা করার সুযোগ পান। প্রথমে গ্রামের এক পুকুরের কাছে ১৫ বছরের এক কিশোরীর সঙ্গে প্রথম অসভ্য আচরণের অভিযোগ ওঠে।
কিশোরী জানান, 'তিনি আমাকে নাম ও বাড়ি জিজ্ঞাসা করছিলেন। পরে বাড়ি ফেরার সময় তিনি আমার পিছু নেন এবং বাড়ি এসে জল খেতে চান। আমি যখন জল এনে দেই, তখন তিনি আমাকে হাত মেলাতে বলেন। আমার বাবা প্রতিবাদ করায় তিনি সেখান থেকে চলে যান।'
এরপর পাশের বাড়িতে থাকা এক গৃহবধূর সঙ্গেও তিনি অশালীন আচরণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। গৃহবধূর ভাষায়, 'আমি রান্না করছিলাম, তখন ওই বহুরূপী এসে চাল চাইতে চায়। আমি চাল দিতে গেলে তিনি আমার হাতটি চেপে ধরে এবং আমার গাল টিপে ধরেন। এর পর শরীরে বিভিন্ন স্থানে স্পর্শ করার চেষ্টা করেন। আমি কোনওমতে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে চিৎকার করলে অভিযুক্ত পালানোর চেষ্টা করেন।'
ওই গৃহবধূর চিৎকার শুনে গ্রামবাসীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে অভিযুক্তকে ধরে ফেলেন। এরপর স্থানীয়রা অভিযুক্তকে আটকে রেখে মারধর করে এবং ঘটনার খবর পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ এসে অভিযুক্তকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। গৃহবধূর শাশুড়ির লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এই ঘটনা গ্রামজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। গ্রামের বাসিন্দারা বহুরূপীর ওই আচরণের প্রতিবাদ জানিয়ে অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন। পুলিশ ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে এবং অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। গ্রামের অনেকেই নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং বহুরূপী বা ছদ্মবেশধারী অপরিচিত ব্যক্তিদের থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।