কেন্দ্র না দিলে রাজ্যই বঞ্চিতদের পাওনা মেটাবে। নিজের লোকসভা কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে আরও একবার প্রতিশ্রুতি দিলেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'আমাকে ৬ মাস সময় দিন। আপনার টাকা আমরা আনব।' আর তা না হলে রাজ্য সরকারই নিজেদের উদ্যোগে ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেবে বলে 'কথা দিলেন' অভিষেক।
এদিন ডায়মন্ডহারবারে প্রাক-পুজো বস্ত্র-বিতরণের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন অভিষেক। সেখানে মঞ্চ থেকে তিনি যা বলেন,
- আমি চেষ্টা করেছি ডায়মন্ডহারবার ২ নম্বর, ১ নম্বর ব্লক মিউনিসিপালিটি জুড়ে উন্নয়নের কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখার। খালি এই বিধানসভাতেই ২০১৪ সালে আমি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে অন্তত ৫০০ কোটি টাকার বেশি রাস্তার কাজ হয়েছে।
- ফলতা-মথুরাপুর জলে প্রকল্প, ভারতবর্ষের বৃহত্তম পানীয় জলের প্রকল্প, প্রায় ১,৪০০ কোটি টাকা খরচ করে চলছে। আগামী ৬-৮ মাসের মধ্যে এই কাজ সম্পূর্ণ হবে। বাড়ি বাড়ি নলবাহিত জল পৌঁছাতে আমাদের রাজ্য সরকার বদ্ধপরিকর।
- গত ১০-১৫ দিন ধরে বাংলার মানুষের প্রতি বিজেপির যে বঞ্চনা, তার বিরুদ্ধে দিল্লিতে গিয়েছিলাম আমরা। আমাদের কৃষি ভবন থেকে বের করে দেওয়া হয়। মন্ত্রী পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়েছিলেন। এরপর কলকাতার রাস্তায় মিছিল করে আমরা রাজ্যপালের কাছে সময় চেয়েছিলাম। ৫ দিন ধর্নার পর রাজ্যপাল আমাদের সময় দিয়েছিলেন।
- সেটা শুধুমাত্র ট্রেলার ছিল। সিনেমাটা আমরা ৩১ অক্টোবরের পর, ১ নভেম্বর থেকে দেখাব। গায়ের জোরে কেউ বাংলার মানুষের টাকা আটকে রাখার চেষ্টা করে, সে সফল হবে না। বাংলার মানুষ শেষ কথা বলবে।
- এই ডায়মন্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্রে, কত চেষ্টা করেছিল বলুন ২০১৯ সালে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী এই লাইট হাউজ মাঠে সভায় এসে বলেছিলেন, অভিষেকের অফিসে তালা পড়ে যাবে। একাধিক তাবড় নেতা-মন্ত্রী, অসময়ের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মা প্রায় এক মাস ঘাঁটি গেড়ে বসেছিল, যাতে আমাকে হারাতে পারে। বিরোধীরা অনেক অপপ্রচার করেছিল। আর সেখানেই ২০১৯ সালে এই বাংলায় সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছিলাম আমি। ডায়মন্ডহারবারে ৩ লক্ষ ২১ হাজার ভোটের নিরিখে সেদিন আমি এক নম্বর হয়েছিলাম।
- কোন খাতে কত টাকা খরচ হচ্ছে, তা বিস্তারিতভাবে আমরা জানিয়েছি। ভারতবর্ষের কোনও সাংসদ তা পারেনি।
- আমি কথা দিয়ে কথা রাখার ছেলে। ১০০ দিনের টাকা যাঁরা পাননি, যাঁরা বঞ্চিত, বাংলায় ২১ লক্ষ ৭৫ হাজার পরিবার ১০০ দিনের কাজ করে ২ বছর ধরে বসে রয়েছেন। আপনাদের পারিশ্রমিক নরেন্দ্র মোদীর সরকার আটকে রেখে দিয়েছে। আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, আমাকে ৬ মাস সময় দিন। আপনার টাকা আমরা আনব। আর যদি আনতে না পারি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার যদি ৩৭ হাজার কোটি টাকা দিয়ে বাংলার মানুষকে লক্ষীর ভাণ্ডার দেয়, আপনার পারিশ্রমিকের ব্যবস্থাও মা-মাটি-মানুষের সরকার করবে। কারও উপর নির্ভর থাকতে হবে না।
- যারা নির্বাচনের সময়ে এসে বড় বড় ভাষণ দেয়, ২০২১-এ নির্বাচন হয়েছে, তাঁদের টিকি আপনারা খুঁজে পাননি।
- দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছর ধরে এখানে একাধিক সিপিএম-এর সাংসদ ছিল। তাঁরা কাজ করেননি। বছরের পর বছর মানুষকে নিপীড়িত, বঞ্চিত, লাঞ্চিত করে রেখেছিল।