
হাইকোর্টের নির্দেশে হাঁসখালি ধর্ষণ মামলার তদন্ত করছে সিবিআই। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় ছয় জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত রবিবার গ্রেফতার করা হয়েছে প্রধান অভিযুক্ত ব্রজগোপাল গয়ালির তিন বন্ধুকে। মঙ্গলবার হাঁসখালি গণধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্ত ব্রজগোপাল গোয়ালার বাবা তথা তৃণমূল নেতা সমরেন্দু গোয়ালাকে তলব করে সিবিআই। তলব করা হয় অভিযুক্ত ব্রজগোপালের মাকেও। এদিন দুপুরে সমরেন্দুকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। বিকেলে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
জানা যাচ্ছে মঙ্গলবার বেলা বারোটা নাগাদ হাঁসখালিতে সিবিআই-এর অস্থায়ী ক্যাম্প অফিসে পৌঁছন জগোপাল গয়ালির বাবা। অটো করে তিনি সিবিআই ক্যাম্প অফিসে হাজির হন। সমরেন্দু গোয়াল স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েতের সদস্য। এর আগে তার বিরুদ্ধে হুমকি, মারধর-সহ একাধিক অভিযোগ উঠেছিল। শুধু তাই নয়, এরসঙ্গে রয়েছে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগও। মঙ্গলবার ছেলের সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি সমরেন্দুকে আটক করে সিবিআই। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ব্রজগোপালের সঙ্গে বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ
হাঁসখালি গণধর্ষণ কাণ্ডে অভিযুক্ত ব্রজগোপালের সঙ্গে তার বাবা সমরেন্দু গয়ালি ও মাকে এরসঙ্গে বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে সিবিআই। তদন্তকারী আধিকারিকরা বেশ কয়েকটি বিষয়ে স্পষ্ট হতে চান। জন্মদিনের পার্টি সমরেন্দুর বাড়িতে হয়েছিল কিনা, পরিবারের পক্ষ থেকে ওই নাবালিকাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল নাকি ব্রজগোপাল নিজেই আমন্ত্রণ জানিয়েছিল, ঘটনার সময় সমরেন্দু এবং তার স্ত্রী কোথায় ছিলেন এই সব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা চলছে। সমরেন্দুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে হাঁসখালির তদন্তের জট আরও খুলবে বলেই মত সিবিআই আধিকারিকদের।
কেন্দ্রীয় গোয়ান্দা সংস্থা সূত্র খবর, ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন সমরেন্দু গোয়ালা। তবে আজকে সিবিআই তলব করার পর হাজিরা দিতে হয় তাকে। প্রসঙ্গত, হাঁসখালিতে কয়েকদিন আগে এক নাবালিকাকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। যার মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার ছেলে ব্রজগোপাল। অভিযোগ, নিজের জন্মদিনের পার্টিতে আমন্ত্রণ করে ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করেছিল কয়েকজন, যার মধ্যে ব্রজগোপালও ছিল। এরপর অসুস্থ হয়ে পড়েছিল নাবালিকা। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরে মৃত্যু হয় ওই নাবালিকার। এমনকী, প্রমাণ লোপাট করতে তড়িঘড়ি নাবালিকার দেহ দাহ করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ব্রজগোপাল সহ আরও বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। মূল অভিযুক্ত ব্রজগোপালকে আগেই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। প্রসঙ্গত সোমবারই সিবিআই জানিয়েছিল, হাঁসখালির ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করার আগে তাকে গাঁজা সহ অন্যান্য মাদক খাওয়ানো হয়েছিল। তার পর তাঁকে তিন জন ধর্ষণ করে। রাস্তায় পড়েছিল নাবালিকা। স্থানীয় এক মহিলা তাকে স্কুটিতে বাড়ি পৌঁছে দেন।