
কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। বেলডাঙায় বাবরি মসজিদ নির্মাণের জন্য সহৃদয় ব্যক্তিরা মুক্ত হস্তে দান করেছেন। রবিবার মধ্যরাত পর্যন্ত গুনেও শেষ করা যায়নি। টাকা বোঝই মোট ১১টি ট্রাঙ্ক জড়ো করা হয়েছে ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের বাড়ির ৩ তলার ঘরে। নগদ ছাড়াও অনলাইন এবং ব্যাঙ্কে জমা পড়েছে টাকা। মোট কত টাকা উঠল এখনও পর্যন্ত? খোঁজ নিল bangla.aajtak.in.
গত ৬ অগাস্ট বেলডাঙায় বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করেছেন তৃণমূলের সাসপেন্ডেড নেতা হুমায়ুন কবীর। শিলান্যাসের মঞ্চ থেকেই তিনি ঘোষণা করেছিলেন, এই মসজিদ নির্মাণের জন্য মোট বাজেট ৩০০ কোটি টাকা। তবে এই বাজেট বেড়ে যেতে পারে বলেও bangla.aajtak.in-কে জানিয়েছেন হুমায়ুন। তাঁর কথায়, 'আপাতত ৩০০ কোটি। তবে প্রজেক্ট সম্পূর্ণ করতে গিয়ে বাজারে যদি মেটেরিয়াল কস্ট বেড়ে যায়, সেক্ষেত্রে বাজেট বাড়তে পারে।'
এখনও পর্যন্ত কত টাকা উঠল?
'পশ্চিমবঙ্গ ইসলামিক ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়া' ট্রাস্টের নামেই জমা পড়ছে বেলডাঙার বাবরি মসজিদ নির্মাণের জন্য দানের টাকা। হুমায়ুন কবীরের বাড়িতেই গণনা হচ্ছে নগদ অর্থ। শিলান্যাসের মঞ্চে নগদ যে পরিমাণ অর্থ জমা পড়েছে তা বয়ে আনতে মোট ১১টি ট্রাঙ্ক লেগেছে। ফেসবুক লাইভ করে দানের অর্থ গণনা দেখিয়েছেন হুমায়ুন কবীর। হাতে গুনে কূল-কিনারা পাওয়া যাচ্ছিল না ফলে আনতে হয়েছে টাকার মেশিনও।
হুমায়ুন কবীর বলেন, 'ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কত টাকা জমা পড়েছে সেই তথ্য আজ হাতে পাব। নগদ যা জমা পড়েছে তা ১১ ট্র্যাঙ্ক ভর্তি। খুচরো টাকা থেকে শুরু করে নগদের মধ্যে রয়েছে ১০ টাকা, ২০ টাকা, ৫০ টাকা, ১০০ টাকা, ২০০ টাকা, ৫০০ টাকার নোট। কাল রাত পর্যন্ত ৬টা ট্র্যাঙ্কের টাকা গোনা হয়েছে।'
কারা গুনলেন এই বিপুল পরিমাণ টাকা?
হুমায়ুন বলছেন, 'যারা গুনলেন তাঁরা কেউ আমার নিজের লোক নয়, পার্টিরও লোক নয়। এই এলাকার বিশিষ্ট মৌলানা, ইমাম টাকা গুনেছেন। আর সবটাই ফেসবুক লাইভ করা হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরার সামনে ট্রাঙ্ক থেকে টাকা বের করা হয়েছে। আমার বাড়ির ৩ তলায় একটি ভাল ঘর রয়েছে। সেখানেই এই টাকা গোনার কাজ চলছে। স্বচ্ছতা রাখা হয়েছে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ায়। টাকা কাউন্টিংয়ের সমস্তটাই লাইভ টেলিকাস্ট হচ্ছে। একটু অপেক্ষা করুন, প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে আমি নিজের পেজ থেকে লাইভ করে জানাব কত টাকা উঠল। সাধারণ মানুষ যারা দান করছেন, তাঁদের টাকা যাতে অপচয় না হয় সেটার জন্য দায়িত্ব আমাদের ট্রাস্টের। মানুষ আমাদের প্রতি যে আস্থা রেখেছে তার কোনও অমর্যাদা হবে না।'
সূত্রের খবর, অনলাইনেই এখনও পর্যন্ত ৯৩ লক্ষের বেশি টাকা জমা পড়েছে। ৪টি ট্রাঙ্ক এবং একটি বস্তা থেকে নগদে মিলেছে ৩৭ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা। বাকি দানবাক্সের গণনা শুরু হবে সোমবার বিকেল ৫টা থেকে। আবার হুমায়ুন কবীর শিলান্যাসের মঞ্চ থেকেই ঘোষণা করেছিলেন, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সহৃদয় মুসলিম ব্যক্তি এই মসজিদের নির্মাণের জন্য ৮০ কোটি টাকা দিতে চেয়েছেন। সে টাকা অ্যাকাউন্টে জমা পড়লে জানাবেন বলে উল্লেখ করেছেন হুমায়ুন।