
বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করতে উদ্যোগী তৃণমূলের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে বৃহস্পতিবার আজীবনের জন্য সাসপেন্ড করল দল। আর তা শুনেই প্রবল ক্ষুব্ধ হলেন হুমায়ুন কবীর। কালই তিনি দল ছেলে দেবেন বলে কার্যত হুঁশিয়ারি দিলেন।
কী বললেন হুমায়ুন?
ভরতপুরের বিধায়ক বলেন, 'কালকেই রিজাইন দিয়ে দেব। নতুন দল গড়ব। কাল অথবা আগামী সোমবার বিধায়ক পদে ইস্তফা দেব। আপনাদের কাছে শুনলাম দল আমাকে সাসপেন্ড করেছে। ফিরহাদ হাকিমের কথার কৈফিয়ত দেব না। যা পারে করুক। এর আগেও তো ২০১৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন মহাসহিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় আমায় বিনা নোটিসে সাসপেন্ড করেছিল।' ঘণ্টা দু'য়েক পর তিনি জেলা সভাপতির সঙ্গে কথা বলে বহরমপুরে সাংবাদিক সম্মেলন করবেন বলে জানিয়েছেন হুমায়ুন কবীর। শোনা যাচ্ছে ২২ ডিসেম্বর তিনি নতুন দলের ঘোষণা করতে চলেছেন।
তিনি আরও বলেন, 'নিজের টাকায় মুসলিমদের জন্য একটা মসজিদ গড়তে বাধা কেন? যখন ক্লাবগুলোকে সরকার টাকা বিলোয়? উন্নয়নের নামে যখন তোলাবাজি চলে? বেশ করব মসজিদ গড়ব। এই RSS মার্কা মুখ্যমন্ত্রীর থেকে আগামী দিনে কেউ BJP-র মুখ্যমন্ত্রী হলে স্বাগত জানাব।' নিজে একটি ধর্মনিরপেক্ষ দল প্রস্তুত রেখেছেন বলে জানান তিনি। ৩১ জন সদস্য নিয়ে আগামী ২২ ডিসেম্বর সেই দল আত্মপ্রকাশ করবেন বলেও জানান তিনি। বিধানসভা ভোটে তাঁর দল তৃণমূল এবং BJP উভয়ের বিরুদ্ধেই লড়বেন।
কেন সাসপেন্ড?
এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে ফিরহাদ হাকিম বলেন, 'ঘৃণার রাজনীতি মনে নেবে না তৃণমূল। উনি রেজিনগরে থাকেন। ভরতপুরের বিধায়ক। বেলেডাঙায় গিয়ে কেন বাবরি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন? ওই এলাকা ধর্মীয় ভাবে স্পর্শকাতর। দলের সঙ্গে হুমায়ুন কবীরের কোনও সম্পর্ক থাকবে না। ধর্ম নিয়ে যাঁরা বিভাজনের রাজনীতি করেন, তাঁদের সঙ্গে দল কোনও সম্পর্ক রাখবে না। ধর্ম নিয়ে ঘৃণার রাজনীতি তৃণমূল বরদাস্ত করবে না।’ তাঁর সংযোজন, 'ওখানে বাবরি মসজিদ তৈরি হলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রত্যেকবার নির্বাচনের আগে BJP বিভাজনের রাজনীতি করতে তৃণমূলের একটা দু'টো গদ্দারকে নিয়ে গিয়ে এই কার্ড খেলে। BJP-র কথাতেই হুমায়ুন ভাই এই বিভাজনের রাজনীতি করছে।' তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্মতিতেই দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
BJP-র প্রতিক্রিয়া
BJP-র রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য বলেন, 'যখন তিনি বলেছিলেন ওরা ৩০ শতাংশ আর আমরা ৭০ শতাংশ, যখন পারব কেটে ভাসিয়ে দেব। সেদিন কী করছিলেন? এগুলো স্রেফ নাটক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাবরের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন। পশ্চিমবঙ্গ শুধু নয়, ভারতের মানুষে ওখানে এমনটা হতে দেবে না।'