আবার শিরোনামে সেই রাজীব কুমার। বুধবার রাজ্য পুলিশের নতুন ডিজিপি পদে দায়িত্ব দেওয়া হল আইপিএস রাজীব কুমারকে। মনোজ মালব্যের স্থলাভিষিক্ত করা হচ্ছে রাজীবকে। ৩ বছরের জন্য রাজ্য পুলিশের উপদেষ্টা পদে নিয়োগ করা হচ্ছে মালব্যকে। এক সময় কলকাতা পুলিশের নগরপাল ছিলেন রাজীব। সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে রাজীবকে তলব করেছিল সিবিআই। যা ঘিরে সরগরম হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। রাজীবকে নয়া দায়িত্ব দেওয়ার দিনই হইচই ফেলেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
কী বলেছেন কুণাল?
রাজীবকে নয়া ডিজিপি পদে দায়িত্ব দেওয়া প্রসঙ্গে বুধবার কুণাল বলেছেন, 'রাজীব কুমার দক্ষ পুলিশ অফিসার। মাঝখানে কিছু হয়েছিল। আমার সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। কালীপুজোর দিন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে দেখা হয়েছিল। সৌজন্য বিনিময় হয়েছিল। ডিজি পদে এসেছেন। ভাল খবর। ভাল থাকুন।' এর পরই কুণাল বলেছেন, 'আমার মতো কোনও নির্দোষকে কারও নির্দেশে বলি দিতে দেবেন না। কারও না কারও নির্দেশে বলি দিলে, পরের দিন ভগবান ভাল করেন না।'
সারদা কেলেঙ্কারিতে অতীতে গ্রেফতার করা হয়েছিল কুণালকে। এই মামলার তদন্তেই কলকাতায় রাজীব কুমারের বাড়িতে হানা দিয়েছিল সিবিআই। সেই সময় কলকাতার পুলিশ কমিশনার ছিলেন রাজীব। এর প্রতিবাদে ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলে ধর্নায় বসেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। যা ঘিরে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। পরে রাজীবকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। কুণাল এবং রাজীবকে মুখোমুখি বসিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল।
অন্য দিকে, এই প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কটাক্ষের সুরে বলেছেন, 'সারদার প্রমাণ লোপাটের পুরস্কার এটা।' শুভেন্দু আরও বলেছেন, 'সারদা চিটফান্ড মামলায় সব ডিভাইস নষ্ট করেছেন রাজীব কুমার। সুদীপ্ত সেনের অফিস থেকে যদি ওই বৈদ্যুতিন ফাইলগুলি উদ্ধার করত সিবিআই, তা হলে সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে জেলে যেতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সারদায় সবচেয়ে সুবিধা ভোগ করেছেন মমতা। সকলে জানেন এটা। রাজীব কুমারের জন্যই জেলের বাইরে মমতা। তাই রাজীবের জন্য ধর্নায় বসেছিলেন। এটা রিটার্ন গিফট রাজীবকে...গ্রেফতারি এড়াতে হাই কোর্টে গিয়ে জামিন নিয়েছেন রাজীব। সুপ্রিম কোর্টে তা চ্যালেঞ্জ করেছে সিবিআই। ২ বছর ধরে মামলা ঝুলে রয়েছে। সিবিআই এবং সলিসিটর জেনারেলকে অনুরোধ করছি, সুপ্রিম কোর্টে যেন দ্রুত মামলার শুনানি শুরু হয়।'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'আস্থাভজন' হিসাবেই পরিচিত রাজীব। তথ্য প্রযুক্তি দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পদে ছিলেন তিনি। সেই আইপিএসকে এ বার রাজ্য পুলিশের ডিজি পদে ফেরানো হল। যা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। একই সঙ্গে রাজীব প্রসঙ্গে কুণালের মন্তব্য আলাদা মাত্রা যোগ করল।