সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর শিক্ষক, শিক্ষিকাদের চাকরি চলে যাওয়ায় ধুঁকছে একাধিক স্কুল। রাজ্যজুড়ে বহু স্কুলে প্রচুর সংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষিকারা চাকরি হারিয়েছেন। বাদ পড়েছেন অশিক্ষক করিমীরাও। কোথাও বিজ্ঞান বিভাগ শূন্য হয়ে গেছে তো কোথাও ঘণ্টা বাজানোর লোকও নেই। চরম পরিণতি রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলির। ধূপগুড়ি পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ঘোষপাড়া জুনিয়র হাইস্কুল। এই জুনিয়র হাই স্কুলে বর্তমানে সাত জন পড়ুয়া রয়েছে। একজন শিক্ষক এবং একজন গ্রুপ ডি কর্মী স্কুল চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ১০-১৫ দিন আগে স্কুলের একমাত্র শিক্ষকের মৃত্যু হয়।
এরপরই শিক্ষা দফতরের তরফে সাময়িকভাবে স্কুল চালানোর জন্য একজন শিক্ষিকাকে বলা হয়। গত দু' তিন দিন ধরে ওই শিক্ষিকা গ্রুপ ডি'র কর্মীকে নিয়ে স্কুল চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারিয়েছেন ওই বিদ্যালয়ের গ্রুপ ডি কর্মী। তাই এই মুহূর্তে খাতায়-কলমে এই বিদ্যালয়ে একজনও শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মী নেই।
বর্তমানে স্কুলের দায়িত্বে থাকা শিক্ষিকা সৌমিতা রায় বলেন, "এখানে একজন শিক্ষক ছিলেন। তিনি কিছুদিন আগে প্রয়াত হন। এরপর আমাকে স্কুল চালানোর জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্ত সুপ্রিম কোর্টের রায়ে স্কুলের গ্রুপ ডি'র কর্মীর চাকরি চলে গেছে। বর্তমানে স্থায়ী কোনও শিক্ষক নেই। চিন্তায় রয়েছি কীভাবে স্কুল চালাব।"
স্থানীয় বাসিন্দা কালাচাঁদ ঘোষ বলেন, "স্কুলে এমনিতেই ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা কম। তারপর একজনের চাকরি চলে গেল। এখন এই স্কুল থাকবে কিনা তা নিয়ে আমরা চিন্তাতে রয়েছি।"
প্রসঙ্গত, বিশ বাঁও জলে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের ভবিষ্যৎ। যোগ্য ও অযোগ্য চাকরিপ্রাপকদের আলাদা না করা যাওয়ায় সুপ্রিম কোর্টেও বাতিল হয় পুরো প্যানেল। উপরন্তু, চিহ্নিত অযোগ্যদের ১২ শতাংশ সুদে ফেরৎ দিতে হবে বেতন। এই সঙ্গিন পরিস্থিতিতে বিরোধীদের নিশানায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ৭ এপ্রিল নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তাঁদের সমস্ত অভাব অভিযোগ শুনবেন মমতা।