
মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জে পিতা-পুত্র খুনের ঘটনায় ১৩ জনকেই যাবজ্জীবনের কারাদণ্ডের সাজা শোনাল জঙ্গিপুর মহাকুমা আদালত। গতকালই তাদেরকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। মঙ্গলবার দোষীদের শাস্তি ঘোষণা করলেন বিচারক অমিতাভ মুখোপাধ্যায়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি, ১৫ লক্ষ টাকা করে জরিমানা করারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
কিন্তু এই রায়ে খুশি হননি শুভেন্দু অধিকারী। রায় ঘোষণার পরেই মৃত চন্দন দাসের মাকে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন বিজেপি নেতা। তিনি বলেন, "এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চতর আদালতে আবেদন করব। দোষীদের ফাঁসি চাই।" পাশাপাশি সাংবাদিকদের সামনে চন্দন দাসের মা বলেন, "আমার স্বামী-ছেলেকে চোখের খুন করা হয়েছে। আমি দোষীদের ফাঁসি চাই।"
শুভেন্দুর দাবি, "এই ঘটনায় পুলিশ সঠিক ভাবে চার্জশিট পেশ করেনি। সেই কারণেই ১৩ জনের মধ্যে কারও ফাঁসি হয়নি। এই রায়ের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে যাওয়া হবে। আমরা চন্দন দাসের মায়ের পাশে আছি। এই ঘটনায় অবশ্যই ফাঁসি হওয়া উচিত ছিল।"
যে ১৩ জনকে যাবজ্জীবন ফাঁসির সাজা ঘোষণা করা হল, তাঁরা হলেন দিলদার নাদাব, আসামুল নাদাব, ইঞ্জামুল হক, জিয়াউল হক, ফেখারুল শেখ, আজফারুল শেখ, মুনিরুল শেখ, ইকবাল শেখ, নুরুল শেখ, সাবা করিম, হজরত শেখ, আকবর আলি ও ইউসুফ শেখ।
উল্লেখ্য, সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে এপ্রিল মাসে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল মুর্শিদাবাদ। এরই মধ্যে ১২ এপ্রিল জেলার সামসেরগঞ্জ থানার জাফরাবাদ গ্রামে নৃশংসভাবে খুন করা হয় হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাসকে। ঘটনার পর থেকেই গোটা এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ ওঠে,পূর্বপরিকল্পিতভাবে ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেই তাঁদের উপর এই নৃশংস হামলা চালিয়ে খুন করা হয়েছে।
ঘটনার পরপরই পুলিশ তদন্ত শুরু করে। পরে একে একে ১৩ জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়। ঘটনায় ৫৫ দিনের মাথায় জঙ্গিপুর মহাকুমা আদালতে পুলিশের তরফে পেশ করা হয় চার্জশিট। সেই চার্জশিটে বলা ছিল নৃশংস ভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে বাবা-পুত্রকে। এরপর আরও ৬ মাস ধরে মামলার পর অবশেষে সেই মামলায় রায় ঘোষণা করল আদালত।