বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের হঠাৎ ইস্তফা। রাজ্য রাজনীতিতে এখন সকলের নজর তাঁরই দিকে। রাজনীতির ময়দানে নয়া ইনিংস শুরু করতে পারেন তিনি। লোকসভা ভোটের আগে তিনি কোন দলে যোগ গেবেন? সেদিকেই তাঁকিয়ে সকলে। তবে এরই মধ্যে যেন কিছুটা হতাশ চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের অনেকেরই মনে এখন একটাই প্রশ্ন, 'ভগবান' কি তাঁদের ছেড়ে যাচ্ছেন?
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একের পর এক রায়ের কারণেই তাঁকে 'ভগবানে'র আসনে বসান চাকরিপ্রার্থীরা। ন্যায় প্রদানে তাঁর প্রচেষ্টা, অযোগ্য প্রার্থীদের অপসারণের মতো সিদ্ধান্তের কারণে তাঁর উপরেই ভরসা আন্দোলনকারীদের। কিন্তু সেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ই যদি আর এজলাসে না থাকেন, তবে এখন তাঁদের কথা কে শুনবেন?
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া
সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'ভগবান তো ইমোশনালি বলেন। বাঙালি ইমোশনেই চলে এবং সেটা ভাল। ইমোশন আছে বলেই বাংলায় জাতপাত এখনও এতটা প্রকট নয়। তাঁরা এভাবে বলেন বা ভাবেন। আসলে তো কেউ ভগবান নন। কেউ কাজের মধ্যে দিয়ে হয়ত মানুষের পাশে দাঁড়ান। আমি ও চেষ্টা করেছি। চেষ্টা করবও।"
সরে দাঁড়ানোর কারণ
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে চাইছিলেন তিনি। আর সেটা শুধুমাত্র সক্রিয় রাজনীতির মাধ্যমেই সম্ভব। বিচারপতি হিসাবে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারছিলেন না। সেই কারণেই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। তবে কোন দলে তিনি যোগ দেবেন তা এখনও পর্যন্ত জানাননি।
হঠাৎ এভাবে তাঁর সরে দাঁড়ানো নিয়ে তুমুল ঝড় উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক নেতানেত্রীর দাবি, এর থেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বরাবরই গেরুয়া শিবিরের পক্ষপাতদুষ্ট ছিলেন। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তিনি তো তৃণমূলের বিরুদ্ধে সব রায় দিতেন। এতদিনে তাঁর আসল রূপটা জানা গেল। বাবুল সুপ্রিয়োর কথায়, 'অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের স্বরূপ প্রকাশ পেল, ওঁর লক্ষ্য মুখ্যমন্ত্রী হওয়া।' অন্যদিকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই বিষয়ে এখনই মন্তব্য করতে চাননি।
তবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সরে দাঁড়ানোয় ফের অনিশ্চয়তায় ভুগছেন আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীরা। আদালতের বাইরে, তাঁদের পাশে 'ভগবান' থাকবেন তো? সেই প্রশ্নই এখন ঘুরছে তাঁদের মনে।