কলকাতা হাইকোর্ট সম্প্রতি একটি জনস্বার্থ মামলায় রায় দিয়ে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের একটি বাসন কারখানা সরানোর নির্দেশ দিয়েছে। প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, বাসন কারখানার মালিককে ১৫ দিনের মধ্যে কারখানাটি অন্যত্র সরিয়ে নিতে হবে। পাশাপাশি, আদালতের পর্যবেক্ষণ, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অনুমতি রয়েছে এবং বাসিন্দাদের আপত্তি নেই এমন এলাকায় কারখানা করা যেতে পারে।
সামশেরগঞ্জের ভাসাইপাইকর গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করেছেন, বাসন কারখানার শব্দে তাদের রাতে ঘুম নষ্ট হচ্ছে এবং জীবনে শান্তি বিঘ্নিত হচ্ছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁরা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। তাঁদের বক্তব্য, ১৯৬৪ সালে ফরাক্কা ব্যারেজ প্রকল্পের জন্য ওই এলাকায় অনেক জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে সরকারের তরফে জমিহারাদের কিছু পরিমাণে জায়গা দেওয়া হয়। মামলাকারীরা জানান, সরকারের দেওয়া ওই জমিতে একজন ব্যক্তি বাড়ি না বানিয়ে সম্প্রতি বাসন তৈরির কারখানা করেছেন। এতে ইস্পাতের ব্যাপক শব্দে রাতে ঘুমোতে পারছেন না এলাকার বাসিন্দারা। পাশাপাশি, বাসন কারখানা থেকে নির্গত রাসায়নিক পদার্থ পরিবেশের ক্ষতিও করছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, বাসিন্দারা মুর্শিদাবাদের জেলা প্রশাসন এবং পুলিশের কাছেও অভিযোগ জানায়। এরপর হাইকোর্ট জানতে চায়, কারখানা গড়তে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অনুমতি ছিল কি না। গত ৭ জুলাই প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ পর্ষদকে মামলায় যুক্ত করতে নির্দেশ দেয়। গত বৃহস্পতিবার রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ জানায়, ওই এলাকায় কারখানা তৈরির অনুমোদন তুলে নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে অনুমতি দেওয়া হলেও পরবর্তীতে ওই জমি যাচাই করে দেখা গেছে, ওই জায়গায় শুধুমাত্র বাড়ি তৈরি করা যেতে পারে, শিল্প সংক্রান্ত কোনও কাজ করা যাবে না। এরপরেই আদালত মামলাটির নিষ্পত্তি করে কারখানা সরানোর নির্দেশ দেয়।