কৃষ্ণনগরের কলেজছাত্রী ঈশিতা মালিক হত্যাকাণ্ডে বড় সাফল্য পেল পুলিশ। উত্তরপ্রদেশের মহারাজগঞ্জ জেলার নৌতানওয়া শহর থেকে অভিযুক্ত দেশরাজ সিংকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের বিশেষ দল। জানা গেছে, সে সেখান থেকে নেপাল পালানোর ছক কষেছিল। সোমবার ভোরেই তাকে পাকড়াও করা হয়। এবং ট্রানজিট রিমান্ডে কৃষ্ণনগরে আনা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, এক সপ্তাহ আগে কৃষ্ণনগরের পালপাড়া এলাকায় বান্ধবী ঈশিতার বাড়িতে ঢুকে তাকে গুলি করে হত্যা করে দেশরাজ। সম্পর্ক ভাঙতে চাইছিল ঈশিতা, সেই কারণেই ক্ষিপ্ত হয়ে খুনের পরিকল্পনা করে সে। ঘটনার পর থেকে প্রভাবশালী আত্মীয়স্বজন ও গ্যাংস্টার ভাইয়ের সহায়তায় প্রতিদিন আস্তানা বদল করে পুলিশের নজর এড়াচ্ছিল অভিযুক্ত। এমনকি নেপাল সীমান্ত পার হওয়ার জন্য গাড়ি ও জাল নথিও তৈরি করেছিল।
এর আগেই পুলিশ দেশরাজের মামা কুলদীপ সিংকে গুজরাটের জামনগর থেকে গ্রেফতার করে। তিনিই অভিযুক্তকে পালাতে সাহায্য করার জন্য জাল কাগজপত্র জোগাড় করেছিলেন। দেশরাজের বাবা রাঘবেন্দ্র প্রতাপ সিংকে রাজস্থানের জয়সলমীরে গৃহবন্দী করা হয়েছে এবং তাঁকেও শীঘ্রই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হবে।
জানা গেছে, দেশরাজ লাগাতার ঈশিতাকে হুমকি দিত। অভিযোগ, এক বার আত্মহত্যার চেষ্টা করছে বলে ভিডিও করে ‘প্রেমিকা’কে পাঠিয়েছিল। কিন্তু তাতেও নিজের সিদ্ধান্ত থেকে নড়েনি ঈশিতা। আর তাতেই নির্মমভাবে মাথায় তিনটে গুলি করে ঈশিতাকে খুন করে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা দেশরাজ।
পুলিশ জানিয়েছে, এই অপরাধের নেপথ্যে পরিবারের একাধিক সদস্য অভিযুক্তকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে। তাই শুধু দেশরাজকে গ্রেফতার করাই নয়, গোটা নেটওয়ার্ক ভাঙতে এখন তৎপর তদন্তকারীরা।
কৃষ্ণনগরের নৃশংস হত্যাকাণ্ড বাংলার পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশ ও রাজস্থানের প্রশাসনকেও একসঙ্গে নাড়িয়ে দিয়েছে। পুলিশ মনে করছে, দেশরাজকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে শুধু একজন অপরাধীকে পাকড়াও করা নয়, বরং একটি বড় অপরাধচক্রকে ভেঙে ফেলার সুযোগ তৈরি হয়েছে।