কৃষ্ণনগরের ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডে উঠে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রাথমিক ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, নির্যাতিতাকে ধর্ষণ করা হয়নি। বরং তাকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। এই খবর জানা যাচ্ছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে। আরও জানা যাচ্ছে, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, নির্যাতিতার শরীরে অ্যান্টিমর্টেম বার্ন (মৃত্যুর আগে আগুনে পোড়া) পাওয়া গেছে, যা ইঙ্গিত দেয় তাকে জীবন্ত অবস্থায় পুড়িয়ে মারা হয়েছে। বিশেষজ্ঞের বক্তব্য অনুযায়ী, “অ্যাসিডে পোড়ানোর প্রমাণ পাওয়া যায়নি, বরং আগুনে পোড়ার প্রমাণ স্পষ্টভাবে পাওয়া গেছে।”
সূত্রের খবর, তবে তদন্ত এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। কিছু নমুনা পরীক্ষা করার জন্য বাইরে পাঠানো হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা আরও বলেছেন, আগুনে পোড়া দেহ থেকে সাধারণত অনেক ধরনের শরীরীয় ফ্লুইড বের হয়, যা তদন্তে সহায়ক হতে পারে।
পরিবারের গণধর্ষণের অভিযোগ
নির্যাতিতার পরিবার প্রথম থেকেই গণধর্ষণের অভিযোগ তুলেছিল। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ধর্ষণের কোনও প্রমাণ মেলেনি বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে। কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল (জেএনএম) হাসপাতালে বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।
মায়ের সিবিআই তদন্তের দাবি
নির্যাতিতার মা পুলিশের তদন্তে আস্থা রাখতে পারছেন না। ইতিমধ্যেই তিনি সিবিআই তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেছেন। পরিবারের দাবি, পুলিশের তদন্তে অনেক ফাঁকফোকর রয়ে গেছে এবং প্রকৃত সত্য আড়ালে থাকার আশঙ্কা রয়েছে।
প্রেমিক ও টাকার লেনদেন
পুলিশ ইতিমধ্যে নির্যাতিতার প্রেমিককে গ্রেফতার করেছে এবং আরও একজন কমন ফ্রেন্ডকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। তদন্তে জানা গেছে, নির্যাতিতা তার প্রেমিকের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। প্রেমিক বেঙ্গালুরুতে হোটেলে কাজ পেয়ে সেখানেই চলে যান এবং তরুণী তার কাছে বেঙ্গালুরুতে প্রায় পনেরো দিনের জন্য ছিলেন, যা পরিবারকে জানানো হয়নি। এসময় তাঁর পরিবার থানায় নিখোঁজ অভিযোগ দায়ের করে।
তদন্তের বিভিন্ন দিক
পুলিশ এখন খতিয়ে দেখছে, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে প্রেমিকের সঙ্গে সম্পর্কে টানাপোড়েন, নাকি টাকার লেনদেনের বিষয় জড়িত। তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে এই দুই সম্ভাবনাকে সামনে রেখে তদন্ত চলছে। এই ঘটনায় কৃষ্ণনগর ও আশেপাশের এলাকাগুলোতে প্রচুর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। নির্যাতিতার মা ও পরিবারের সদস্যরা সঠিক বিচার পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন, এবং পুরো ঘটনার প্রকৃত সত্য উদঘাটনে সিবিআই তদন্তের দাবি জোরালো হচ্ছে।