
পশ্চিমবঙ্গে SIR চলার মাঝেই জাতীয় নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি মনে করেন, সঠিক প্রশিক্ষণের অভাব, নথি সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকার কারণে এই প্রক্রিয়া জটিল হয়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষ ও বিএলও-দের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। এমনকী এই প্রক্রিয়ার জন্য মানুষের জীবন বিপন্ন বলেও মনে করেন তিনি।
শুধু তাই নয়, অবাস্তব কাজের চাপ, অসম্ভব টাইমলাইন এবং অনলাইন ডেটা এন্ট্রির মধ্যে সামঞ্জস্য না থাকায় পুরো প্রক্রিয়াটির বিশ্বাসযোগ্যতা মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। এটি দেশের নির্বাচনী গণতন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দুতে আঘাত করে বলে মনে করেন মমতা।
তিনি মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে চিঠিতে লেখেন,' স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (এসআইআর) যে ভাবে জনগণের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে আমি বারবার আমার গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। এখন SIR ঘিরে পরিস্থিতি গভীর উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে আমি আপনাকে লিখতে বাধ্য হচ্ছি। আধিকারিক ও নাগরিকদের উপর যেভাবে এই প্রক্রিয়া জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, তা কেবল অপরিকল্পিত ও বিশৃঙ্খলই নয়, বিপজ্জনকও বটে। এমনকী প্রাথমিক প্রস্তুতি, পর্যাপ্ত পরিকল্পনা বা যোগাযোগের অনুপস্থিতি প্রথম দিন থেকেই প্রক্রিয়াটিকে পঙ্গু করে দিয়েছে।
পাশাপাশি তাঁর আরও দাবি, বিএলও-দের প্রশিক্ষণে গুরুতর ফাঁক রয়েছে। তাঁরা কাজের মাঝখানে ভোটারদের সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না। এই কারণেই প্রক্রিয়াটি বেজায় জটিল হয়ে উঠেছে।
শুধু তাই নয়, তিনি BLO-দের কঠোর প্রচেষ্টার জন্য গভীর প্রশংসা করেন। সেই সঙ্গে তিনি বিএলওদের উপর অবাস্তব কাজের চাপ, অসম্ভব টাইমলাইন এবং ডেটা এন্ট্রির দায়িত্ব নিয়েও আওয়াজ তোলেন।
তাঁর আরও অভিযোগ, 'এই গতিতে কাজ হলে এটা নিশ্চিত যে ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে একাধিক নির্বাচনী এলাকার ভোটার ডেটা আপলোড করা যাবে না।'
তিনি আরও মনে করেন, অনেক জায়গায় চাপে পড়ে বিএলওরা ভুল তথ্য জমা দিচ্ছে। যার ফলে বাড়ছে সমস্যা। ভোটার তালিকা নির্ভুল থাকছে না।
পাশাপাশি এই চিঠিতেই তিনি জলপাইগুড়ির এক বিএলও-এর আত্মহত্যা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দিকে আঙুল তুলেছেন। এছাড়া বিএলও-দের নানা কারণে নিয়মিত শোকজ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
পরিশেষে মমতা বলেন, 'এই পরিস্থিতিতে আমি দৃঢ়ভাবে অনুরোধ করছি এর জন্য কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এই অপরিকল্পিত, জবরদস্তিমূলক প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়া মানে আরও জীবন বিপন্ন করে তোলা। পাশাপাশি এটি নির্বাচনের বৈধতাও বিপন্ন করে তুলতে পারে।'