মালদায় এলাকার বাসিন্দাদের গণপ্রহারে মৃত্যু হল এক পরিযায়ী শ্রমিকের। চোর সন্দেহে তাঁকে শিকল দিয়ে হাত, পা বেঁধে পিটিয়ে মারা হয় বলে অভিযোগ। মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের মালিওর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের পিপুলতলা এলাকায় শুক্রবার রাতে এই ঘটনাটি ঘটে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে প্রথমে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে তাঁকে চাঁচল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে রেফার করা হয়।
শনিবার রাতে ওই মৃত্যু হয় পরিযায়ী শ্রমিকের। পুলিশ জানায়, গণপ্রহারে নিহতের নাম প্রতাপ মণ্ডল, তাঁর বয়স ছিল ২৪। তাঁর বাড়ির পাশেই মালিওর গ্রামে। প্রতাপ মাস খানেক আগেই ভিন্ রাজ্য থেকে বাড়ি ফিরেছিল। এ ঘটনায় গোটা এলাকা থমথমে হয়ে রয়েছে। পুলিশের উপস্থিতিতে তাঁর শেষকৃত্য করা হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে পিপুলতলা এলাকায় চুরি করতে আসা এক যুবককে হাতেনাতে ধরা হয়েছে বলে এলাকায় চাউর হতেই ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। তারপর দড়ি দিয়ে যুবকের দুই হাত বেঁধে ফেলা হয়। তারপরই শুরু হয় গণপ্রহার। বাসিন্দাদের একাংশ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি। খবর পেয়ে বাড়ির লোকরাও ছুটে আসেন।
মারধরের পাশাপাশি যুবকের পরিবারকে ১৫ হাজার টাকা দিতে হবে বলে লিখিয়ে নেওয়া হয়। এরপর অচেতন অবস্থায় প্রতাপকে তুলে নিয়ে এসে প্রথমে হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। যদিও এভাবে আইন হাতে তুলে নিয়ে কাউকে বেঁধে পিটিয়ে খুনের ঘটনার নিন্দায় অনেকেই সরব হয়েছেন। নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতাপ ভিন রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করতেন। মাস খানেক আগে বাড়িতে ফেরেন। কয়েকদিনের মধ্যেই ফের তাঁর নাগপুরে ফেরার কথা ছিল। ভেঙে পড়েছেন প্রতাপের মা সনজু মণ্ডল। বলেন, আমার ছেলে চোর নয়। ওরা ওকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করেছে। আমি চাই যারা ছেলেকে খুন করেছে তাদের যেন কঠোর শাস্তি হয়।
হরিশ্চন্দ্রপুরের আইসি সঞ্জয়কুমার দাস বলেন, পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। যারা ওই ঘটনায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনমাফিক পদক্ষেপ করা হবে।