মালদা জেলার শেরপুর গ্রামে গত মঙ্গলবার রাতে এক তরুণী ও তার সঙ্গীকে জনসমক্ষে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে, যা সামাজিক মাধ্যমে ভিডিওর মাধ্যমে এখন সামনে এসেছে। যদিও ভিডিওটির সত্যতা 'বাংলা ডট আজতক ডট ইন' যাচাই করেনি। ঘটনাটি কালিয়াচক থানার অন্তর্গত জালালপুর পঞ্চায়েত এলাকার শেরপুর গ্রামে ঘটে। অভিযোগ উঠেছে যে, এক যুগলকে আমবাগানে একসঙ্গে দেখতে পেয়ে গ্রামবাসীর একাংশ তাঁদের ‘পরকীয়া সম্পর্কের’ অভিযোগ তোলে এবং ‘অপরাধ’-এর শাস্তিস্বরূপ তাঁদের উপর নির্মম অত্যাচার চালায়।
ঘটনার বিবরণ:
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে ওই যুগলকে প্রথমে আমবাগান থেকে বের করে এনে রাস্তার ধারে ল্যাম্পপোস্টে বেঁধে বেধড়ক মারধর করা হয়। গ্রামবাসীরা সালিশি সভা বসিয়ে নিজেরাই শাস্তির ব্যবস্থা করে এবং এক পর্যায়ে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন চালায়।
এই ঘটনায় খবর পেয়ে কালিয়াচক থানার পুলিশ দলটি শেরপুর গ্রামে পৌঁছে ওই যুগলকে উদ্ধার করতে চায়। তবে উত্তেজিত জনতা পুলিশকে বাধা দেয় এবং তাদের সঙ্গে বচসা শুরু হয়। অভিযোগ রয়েছে যে জনতার একাংশ পুলিশের ওপর হামলা চালায় এবং থানার ইনচার্জ সুমন রায়চৌধুরির গাড়ি ভাঙচুর করে। এমনকি, পুলিশ কর্মীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোঁড়া হয় এবং লাঠি নিয়ে হামলা চালানো হয়।
পুলিশের প্রতিক্রিয়া ও ব্যবস্থা:
কালিয়াচক থানার অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং পাল্টা লাঠিচার্জ করে উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে। পুলিশ সেই যুগলকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে পুলিশ আটক করেছে এবং পুলিশের উপর হামলার ঘটনা স্বতঃপ্রণোদিত একটি মামলায় রুজু করা হয়েছে।
নিগৃহীতার বক্তব্য:
নিগৃহীতা তরুণী পুলিশের কাছে জানান যে, তিনি ব্যাঙ্কের একটি শাখায় টাকা তুলতে গিয়েছিলেন এবং ওই যুবকের সঙ্গে রাস্তায় দেখা হয়। পূর্ব পরিচিত হওয়ায় তারা রাস্তায় দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ কথা বলছিলেন। কিন্তু গ্রামবাসীর একাংশ বিষয়টিকে ‘অন্যায় সম্পর্ক’ হিসেবে ধরে নিয়ে তাঁদের আটক করে এবং পরবর্তীতে নির্যাতন চালায়।
এই বর্বরোচিত ঘটনার ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর তা নিয়ে এলাকাজুড়ে উত্তেজনা রয়েছে। পুলিশ হামলার ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে এবং যারা এতে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।