ফের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আরজি করের চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য। এদিকে মহারাষ্ট্রের বদলাপুরেও শিশুদের স্কুলে নির্যাতনের ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। এমনই প্রেক্ষাপটে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিষয়ে শক্তিশালী আইন প্রণয়নের জন্য ফের চিঠি লিখলেন মমতা। উল্লেখ্য, এই একই বিষয়ে এর আগেও চিঠি দিয়েছিলেন তিনি। সেখানে এই একই বিষয়ে তাঁর আগের আবেদনের জবাব মেলেনি বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
আলোচ্য নতুন চিঠির একটি অনুলিপি মুখ্যমন্ত্রী তাঁর X (আগে টুইটার) হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন। সেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তাঁর এই উদ্বেগকে 'গুরুত্ব সহকারে না নেওয়ার' অভিযোগ করেছেন। তিনি লিখেছেন, 'এমন একটি সংবেদনশীল বিষয়ে আপনার তরফ থেকে কোনও উত্তর মেলেনি।'
মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রী যদিও এই বিষয়ে উত্তর দিয়েছিলেন। সেটা উল্লেখ করে তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো বলেন, 'আমার চিঠিতে উত্থাপিত ইস্যুটিকে সেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।'
তিনি আরও বলেন, 'আমার মনে হয়, এই উত্তর দেওয়ার সময় বিষয়টিকে যথাযথ গুরুত্ব এবং তার সামাজিক প্রাসঙ্গিকতাকে সেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।'
উল্লেখ্য, এর আগে মুখ্যমন্ত্রীকে একটি চিঠি দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবী। সেখানে নারী ও শিশুদের সুরক্ষার জন্য যে ব্যবস্থা রয়েছে, তার বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলে রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন তিনি।
সেই সমালোচনার পাল্টা জবাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি লিখেছেন, 'রাজ্য সরকারের দৌলতে ১০টি এক্সক্লুসিভ পকসো আদালত অনুমোদিত হয়েছে... এছাড়াও, ৮৮টি FTSCs (ফাস্ট ট্র্যাক স্পেশাল কোর্ট) এবং ৬২টি Pocso মনোনীত আদালত রাজ্য জুড়ে সম্পূর্ণ রাজ্যের অর্থায়নের মাধ্যমে কাজ করছে। মামলাগুলির নিরীক্ষণ এবং নিষ্পত্তি সম্পূর্ণভাবে আদালতের হাতে'।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে ফাস্ট-ট্র্যাক আদালতের কার্যকারিতা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা অনুসারে, শুধুমাত্র অবসরপ্রাপ্ত বিচারবিভাগীয় অফিসারদের FTSC-তে প্রিসাইডিং অফিসার হিসাবে নিয়োগ করা হয়। তিনি বলেন, হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, মামলাগুলির গুরুত্বের কারণে, স্থায়ী বিচার বিভাগীয় আধিকারিক নিয়োগ করা প্রয়োজন। এটি এমন একটি বিষয় যা ভারত সরকারের পরীক্ষা করা প্রয়োজন। 'আপনার হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হবে,' লিখেছেন মমতা।
'জরুরি হেল্পলাইন কাজ করে না' এই দাবি উড়িয়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, 'হেল্পলাইন নম্বর 112 এবং 1098 রাজ্যে ভালভাবে কাজ করছে। এছাড়াও, 100 ডায়ালও জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।'
ধর্ষকদের বিরুদ্ধে কঠোর কেন্দ্রীয় আইনের দাবি
এর আগের চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিশেষ আর্জি জানিয়েছিলেন। সেখানে ধর্ষকদের শাস্তির জন্য একটি কঠোর কেন্দ্রীয় আইন তৈরির অনুরোধ করেছিলেন তিনি। গত সপ্তাহের সেই চিঠির পর এই নিয়ে দ্বিতীয় চিঠি দিয়েছেন মমতা।
এর পাশাপাশি সেই চিঠিতে, দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে এবং ভিকটিমদের দ্রুত বিচার প্রদানের জন্য ফাস্ট-ট্র্যাক বিশেষ আদালত তৈরির প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরেন।