আলিপুরদুয়ারে বন দফতরের ভূমিকা নিয়ে 'অসন্তুষ্ট' মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার আলিপুরদুয়ারে প্রশাসনিক সভায় সেখানকার বন দফতরের একাধিক কাজে ক্ষোভপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজাভাতখাওয়াতে ঢুকতে পর্যটকদের কাছ থেকে কেন টাকা নেওয়া হয়, সে নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মমতা। অবিলম্বে এটা বদলাতে নির্দেশ দেন তিনি। বলেন, 'বন দফতর নিজেদের কী ভাবে, ভগবান জানে! নিজেদের মতো পরিকল্পনা করে।'
এদিন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই সভায় বন দফতরের কাজ নিয়ে অসন্তোষের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, 'আমি যে গেস্ট হাউসে আছি, সেখানে একটা ছবি তুলে আনলাম। দেওয়ালে লেখা আছে, 'পাচারকারীদের গুলি করে মারা হবে!' এটা কি কোনও ল্যাঙ্গুয়েজ হল? আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা বলা হোক।' এই প্রসঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'হনুমানগুলোকে থ্যাঙ্কস, ভাগ্যিস, ওরা ছিঁড়ে দিয়েছিল।' তাঁর সংযোজন, 'অনেক সময় সাধারণ মানুষ যাঁরা জানেন না, ফরেস্টের রাস্তার মধ্যে দিয়ে গেলে তাঁর উপর অনেক অত্যাচার হয়।' পরে বন দফতরের পক্ষ থেকে আধিকারিকরা জানান, ওই লেখাটা এয়ার ফোর্সের। তাঁরা এমন কোনও নির্দেশ দেননি।
বন দফতরের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেছেন, ' অনেকে জানেন না, ভুল করে ফরেস্টের রাস্তা দিয়ে ঢুকে পড়েন। আপনারা খুব স্ট্রং অ্যাকশন করেন কখনও কখনও। যা মানুষের পছন্দ নয়। মনে রাখবেন, বন, অরণ্য, জঙ্গলের প্রতি মানুষেরও অধিকার আছে।সবাইকে নিয়েই চলতে হয় সমাজে।'
অনেকে পিকনিক করতে এসে আলিপুরদুয়ারে বাধার মুখোমুখি হয়েছেন বলে জানান মুখ্যসচিব। তিনি বলেন, এভাবে পর্যটকদের বাধা দিতে পারেন না। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'এভাবে তো আপনারা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। লোকে তো আপনাদের চেনে না। দায় আমাদের উপরে আসে। আমরা তো ছেড়ে কথা বলব না।'
হোম স্টে নিয়েও সমস্যা রয়েছে বলে এদিন অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের কোঅর্ডিনেশন বেটার হওয়া উচিত।' সমস্যা মেটাতে সপ্তাহে ১ দিন বন দফতরের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স করতে মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে, যেসব এলাকায় মানুষ পিকনিক করতে যান, সেখানে বন্যপ্রাণীরা যাতে আক্রমণ না করে, সেটা দেখতে হবে।