মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার সন্দেশখালীর বিতর্কিত পরিবেশে প্রথম সফরে যাচ্ছেন। তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে জমি দখল ও যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রকাশ পাওয়ার পর এই সফরকে ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে।
মুখ্যমন্ত্রীর এই সফর রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় স্থানীয়দের সুবিধা প্রদানের জন্য অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নবান্নে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনে মমতা জানান, "এটি একটি সরকারি কর্মসূচি। ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’, ‘বাংলার বাড়ি’-র মতো প্রকল্পের অধীনে এলাকার প্রায় ২০,০০০ মানুষ উপকৃত হবেন।" তিনি মঞ্চ থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের শংসাপত্র হস্তান্তরের কথাও উল্লেখ করেন।
মমতার সফরের ঠিক পরের দিন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী সন্দেশখালীতে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। তিনি ‘জনসংযোগ যাত্রা’র মাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন এবং বিজেপির দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরবেন।
সন্দেশখালীতে যৌন হয়রানি ও জমি দখলের অভিযোগের কারণে এলাকা হয়ে উঠেছে তৃণমূল ও বিজেপির রাজনৈতিক সংঘর্ষের কেন্দ্র।
এ বছরের জানুয়ারিতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) সন্দেশখালীতে অভিযানের সময় স্থানীয় টিএমসি নেতা শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও জমি দখলের অভিযোগ উঠে আসে। শাহজাহান ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকজন নারী গুরুতর অভিযোগ করেন।
বিরোধীদের তীব্র চাপের মুখে শাহজাহানকে গ্রেফতার করা হয় এবং টিএমসি তাকে বরখাস্ত করে। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটনাটিকে বিজেপি ও ইডি-র ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেন।
যদিও যৌন হয়রানি কাণ্ড ও জমি দখলের বিতর্ক নিয়ে তীব্র বিরোধিতা হয়েছে, তবুও বসিরহাট লোকসভা আসনে তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপিকে পরাজিত করতে সক্ষম হয়েছে। টিএমসির প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলাম বিজেপির প্রার্থী রেখা পাত্রকে বড় ব্যবধানে হারিয়েছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সফর শুধু সরকারি কর্মসূচির জন্য নয়, রাজনৈতিক বার্তাও বহন করছে। লোকসভা নির্বাচনের আগে এলাকার মানুষের মধ্যে তৃণমূলের প্রভাব ধরে রাখা এবং বিতর্কের মধ্যেও দলের অবস্থান স্পষ্ট করাই এর মূল উদ্দেশ্য।
অন্যদিকে, শুভেন্দু অধিকারীর পাল্টা কর্মসূচি সন্দেশখালীর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করতে পারে। এই অঞ্চলের রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং সাধারণ মানুষের অভিযোগ সমাধানে সরকার ও বিরোধী পক্ষের কী ভূমিকা থাকবে, তা এখন দেখার বিষয়।