আসন্ন ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ নিয়ে রাজ্যের প্রস্তুতির কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান, বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এবং ২৪ অক্টোবর রাত থেকে ২৫ অক্টোবর সকালের মধ্যে ওড়িশার পুরী এবং পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপের মধ্যবর্তী অঞ্চলে এই ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল হবে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, তখন ঝড়ের গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১০০-১২০ কিলোমিটার।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, '২৪ অক্টোবর রাত থেকে ২৫ অক্টোবর সকালের মধ্যে পুরী এবং সাগরদ্বীপের মাঝে ল্যান্ডফল হতে পারে। সেই সময় ঝড়ের গতি ১০০ থেকে ১০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় থাকতে পারে। কোথাও কোথাও ১২০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার গতিবেগ দেখা যেতে পারে।'
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের জেরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে সাগরদ্বীপ, দুই ২৪ পরগণা, পূর্ব মেদিনীপুর, এবং কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম সহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলি। ভারী বৃষ্টি এবং দমকা হাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। তিনি জানান, দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকার সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। রাজ্য এবং জেলা স্তরে সমস্ত ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানান, মৎস্যজীবীদের ইতিমধ্যেই সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে এবং নীচু এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উপকূল অঞ্চলে পর্যটকদের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে এবং ফেরি পরিষেবা বন্ধ রাখা হবে। ঝুঁকি এড়াতে ২৩ থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত সাতটি জেলায় স্কুল ও আইসিডিএস সেন্টারগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফ দল মোতায়েন করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশেষ পর্যবেক্ষকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, প্রতি বছর পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়ে, এবং এবারে সব ধরনের সতর্কতা নেওয়া হয়েছে যাতে সাধারণ মানুষের কোনও বিপদের সম্মুখীন হতে না হয়।