কালিয়াগঞ্জে পুলিশের ওপর আক্রমণ ও থানায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় কড়া তদন্ত করে গ্রেফতার ও সম্পত্তি অ্যাটাচ করার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে যে নাবালিকার মৃত্যু ঘিরে এই অশান্তি, সেই ঘটনারও তদন্ত হবে বলে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে নাবালিকার মৃতদেহ ওইভাবে নিয়ে যাওয়া ঠিক হয়নি বলেও মনে করেন মমতা।
বুধবার নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, "ইনভেস্টিগেশন হবে, তবে বিজেপি যে তান্ডব করেছে..., পরিবারটার পাশে আমরা পুরো আছি, ওইটুকু শিশু, আমাদেরও দুঃখ হয়। আমরা হোয়াটসঅ্যাপ টোটালটাই পেয়েছি। তাদের মধ্যে একটা ভালবাসার উদ্যোগ ছিল। তদন্ত চলছে। কিন্ত যে ভাবে কালকে গাড়ি, ঘর পুড়িয়ে লুঠ করেছে বিহারের থেকে লোক নিয়ে এসে, কালিয়াগঞ্জ থেকে রায়গঞ্জে এসে যে গুন্ডামি, যে জল্লাদগিরি করেছে, এমনকী পুলিশের মেয়েদের গায়ে হাত তুলেছে, গর্ভমেন্ট প্রপার্টি পুড়িয়ে দিয়েছে, সাধারণ মানুষের প্রাপার্টি পুড়িয়ে দিয়েছে, এটা নিয়ে স্ট্রংলি তদন্ত করতে পুলিশকে বলবো। একদিকে মেয়েটার কেসটার তদন্ত হবে, আরেক দিকে যারা এই গুন্ডামি করেছে...। যখন ডেটবিটা নিয়ে যাচ্ছে, তাদের পাথর ছোঁড়া হচ্ছিল বড়বড়। তাদের ওইভাবে নিয়ে যাওয়া উচিত হয়নি, কিন্তু নিয়ে যাবে কী করে? তাদের পাথর ছোঁড়া হচ্ছিল। আমার এখন থেকে ঠিক করেছি, থানাগুলোকে ১০টা করে ব্যাগ গিয়ে দেবে, যে ব্যাগগুলোতে ডেডবডি রাখা যায়। পুলিশকে বলব যারা দোষী তাদের বিরুদ্ধে দলমত দেখার দরকার নেই, স্ট্রেট অ্যারেস্ট করুন এবং প্রপার্টি অ্যাটাচ করুন। যেটা ইডি করে সিবিআই করে, এই আইনটা আমরাও করেছি"।
কী হয়েছিল গতকাল?
প্রসঙ্গত, কালিয়াগঞ্জে এক নাবালিকাকে গণধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনা ঘিরে বারেবারেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে কালিয়াগঞ্জের পরিস্থিতি। মঙ্গলবার দুপুরে কালিয়াগঞ্জে থানা অভিযানের ডাক দেয় রাজবংশী তপশিলি আদিবাসী সমন্বয় কমিটি। ওই কর্মসূচি থেকে অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি তোলা হয়। ওই কমিটির তরফে বহু মানুষ থানা অভিযান করেন। কর্মসূচির আগাম খবর পেয়ে থানার সামনে তিনটি জায়গায় ব্যারিকেড তৈরি করে পুলিশে। অভিযোগ, সেই ব্যারিকেড ভেঙে দেন আন্দোলনকারীরা। এরপরেই ঘোরালো হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। বিক্ষোভকারীরা থানায় ঢুকে ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় থানার একটি অংশে। ঘটনায় থানায় আসবাবপত্র, সংলগ্ন বেশকিছু বাইক, থানার গাড়িও পুড়ে গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পাল্টা কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে পুলিশ।