অনুব্রত মণ্ডলের বীরভূমে গিয়ে আবার তাঁর পাশেই দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার বীরভূমের সভায় ফের 'কেষ্ট'র অবদানের কথা তুলে ধরলেন তৃণমূলনেত্রী। বললেন, 'কেষ্টকে কতদিন জেলে ভরে রেখে দিয়েছে। কিন্তু মানুষের মন থেকে ওকে দূর করতে পারেনি। ও কাজ করেছে। কাজ করতে জানে ও।' এর পরই এই নিয়ে বিজেপিকে নিশানা করেছেন মমতা। বলেছেন, 'যদি ওর (কেষ্ট) নামে অভিযোগ থাকে, আপনাদের (বিজেপি) নেতাদের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ রয়েছে। ক'টা অ্যাকশন নিয়েছেন?'
গরু পাচার মামলায় ২০২২ সালের অগস্ট মাসে গ্রেফতার হন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তার পর থেকেই জেলবন্দি এই দাপুটে নেতা। পরে এই মামলায় তাঁর কন্যা সুকন্যা মণ্ডলকেও গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বর্তমানে দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি রয়েছেন অনুব্রত এবং সুকন্যা। অনুব্রতের গ্রেফতারের পর থেকেই তাঁর পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন মমতা। রবিবার ফের অনুব্রতের কাজের প্রশংসা করলেন দলনেত্রী। পাশাপাশি, এ-ও বললেন যে, এখনকার প্রজন্মও অনুব্রতের কথা বলছে।
তৃণমূলে অনুব্রত মণ্ডলকে 'ভোলা যাবে না, তাঁর কৌশলেই লোকসভা নির্বাচনে বীরভূমে লড়তে চায় ঘাসফুল শিবির। কয়েক দিন আগে বীরভূমের নেতাদের নিয়ে বৈঠকে এমন বার্তাই দিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা। বৈঠক শেষে এ কথা জানিয়েছিলেন বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়।
বৈঠক শেষে শতাব্দী সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন, 'নেত্রী বলেছেন, অনুব্রত বেরিয়ে আসবে। সাংগঠনিক ক্ষেত্রে ওর অনেক ভূমিকা রয়েছে। দল থেকে যাতে তাকে সম্মান দেয়,ভুলে যেন না যাওয়া হয়। এ সব কথা বলেছেন নেত্রী। অনুব্রত জেল থেকে ফিরলে তার জায়গা পাবে। এটা নেত্রী বলেছেন।' ২০২২ সালে নেতাজি ইন্ডোরের এক সভা থেকে বীরভূমের নেতাদের উদ্দেশে মমতা বলেছিলেন, 'কেষ্ট একদিন জেল থেকে বেরোবেই। সেদিন ওঁকে নায়কের সংবর্ধনা দিয়ে বার করে আনতে হবে।'
বীরভূম মানেই অনুব্রত-গড়। তৃণমূলের জেলা সভাপতি হিসাবে অনুব্রতের দাপট কম নয় সেখানে। তবে এ বার ছবিটা অন্যরকম। এই প্রথম অনুব্রতহীন বীরভূমে লোকসভার লড়াইয়ে নামবে ঘাসফুল শিবির। তার আগে অনুব্রতের কৌশলেই ভোটে বাজিমাৎ করতে চায় বাংলার শাসকদল। লোকসভা নির্বাচনের আগে অনুব্রতের গড়ে গিয়ে ফের তাঁর পাশে দাঁড়ানোর যে বার্তা দিলেন মমতা, তা নতুন মাত্রা যোগ করল।