বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালিদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে ধর্মতলার সভামঞ্চে তখন বিজেপির বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আচমকাই বক্তব্যের মোড় ঘুরিয়ে বিজেপিকে বিঁধতে শিঙাড়া-জিলিপি খাওয়া নিয়ে সাম্প্রতিক এক নির্দেশিকা নিয়ে সরব হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। আর তখনই মুখ্যমন্ত্রী বললেন বাতাসার কথা।
শিঙাড়া-জিলিপি বিতর্কে এদিন ফের কেন্দ্রকে নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার মিছিল শেষে ধর্মতলার সভামঞ্চ থেকে এই প্রসঙ্গে দেশের বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করেছেন মমতা। কটাক্ষের সুরে বলেছেন, 'শিঙাড়া খাবেন না, জিলিপি খাবেন না, তো কি বাতাসা খাবে?'
ঠিক কী বলেছেন মমতা
বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালিদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে এদিন রাজপথে মিছিল করেন মুখ্যমন্ত্রী। মিছিল শেষে ধর্মতলায় মমতা শিঙাড়া-জিলিপির প্রসঙ্গ টানেন। বলেন, 'অ্যাডভাইজরি ছেড়ে বলছে, ঠাকুর ঘরে কে আমি তো কলা খাইনি, আমি তো সতর্ক করেছি, সব জায়গায় ঝোলাচ্ছো, সিগারেটের সময় ক্যান্সারের ছবি দেখায়, শিঙাড়া খাবেন না, সমোসা খাবেন না, জিলিপি খাবেন না, তো কি বাতাসা খাবে? গ্রামবাংলার লোকেরা তো বাতাসা খান।' শিঙাড়া-জিলিপি সংক্রান্ত নির্দেশিকা নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই কেন্দ্র জানিয়েছে, এটা ভিত্তিহীন। জনস্বার্থে সচেতনতামূলক পরামর্শ বলে দাবি করা হয়েছে। তারপরেও এদিন বাঙালিদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে মমতা যে ভাবে শিঙাড়া-জিলিপির প্রসঙ্গ টানলেন, তা রাজনৈতিক দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।
প্রসঙ্গত, শিঙাড়া, জিলিপির মতো খাবার নিয়ে সম্প্রতি একটি নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীনস্থ অয়েল অ্যান্ড ফ্যাট বোর্ড। ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এই ধরনের খাবারে কত পরিমাণ চর্বি, শর্করা থাকে, তাতে কী কী ক্ষতি হতে পারে, তা নিয়ে মানুষকে সতর্ক করতে হবে। যদিও কেন্দ্রের এহেন নির্দেশিকা বাংলায় মানা হবে না বলে জানিয়েছে তৃণমূল। তবে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, 'শিঙাড়া-জিলিপির মতো জনপ্রিয় খাবারে কোনও সতর্কবার্তা জারি করা হয়নি। এই খবর সম্পূর্ণ মিথ্যে, বিভ্রান্তিকর ও ভিত্তিহীন।'পিআইবি-র বিবৃতি অনুযায়ী, কেন্দ্র কোনও ফুড লেবেলিং-এর নির্দেশ দেয়নি। বরং কর্মস্থলে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়াতে একটি জনস্বার্থে সচেতনতামূলক পরামর্শ জারি করা হয়েছে।সেই পরামর্শে বলা হয়েছে, অফিস, ক্যান্টিন, লবি, ক্যাফেটেরিয়া ও মিটিং রুমে ‘তেল ও চিনির বোর্ড’ বসানো হবে। এই বোর্ডের মাধ্যমে জানানো হবে কোন খাবারে কতটা ফ্যাট ও অতিরিক্ত চিনি থাকে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক্স হ্যান্ডলে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছিলেন, 'কিছু মিডিয়ায় দাবি করা হয়েছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশে নাকি এখন থেকে শিঙাড়া-জিলিপি খাওয়া যাবে না। এটা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কোনও বিজ্ঞপ্তি নয়। আমরা মানুষের খাদ্যাভ্যাসে হস্তক্ষেপ করছি না।' মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'শিঙাড়া-জিলিপি অন্য রাজ্যেও জনপ্রিয়। সেখানকার মানুষও এগুলি ভালোবাসেন। মানুষের খাদ্যাভাসে নাক গলানো উচিত নয়।'