রাজ্যে শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিতে চালু হওয়া মিড-ডে-মিল প্রকল্পে এবার নতুন সংযোজন — এবার থেকে স্কুল চত্বরের আশপাশে থাকা পথ কুকুরদেরও খাওয়াতে হবে সেই খাবার থেকে। শনিবার 'পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র শিক্ষা মিশন'-এর তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে, প্রতিটি স্কুলকে দিনে অন্তত একবার পথ কুকুরদের খাওয়াতে হবে এবং সেই দায়িত্ব নিতে হবে শিক্ষকদের।
নির্দেশিকায় কী বলা হয়েছে?
সমাজকর্মী ও পশুপ্রেমী মানেকা গান্ধীর অনুরোধে সাড়া দিয়ে রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, স্কুলের শিক্ষক এবং মিড-ডে-মিল রান্নার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের মধ্য থেকে কাউকে নির্দিষ্টভাবে এই দায়িত্ব নিতে হবে। শুধু খাওয়ানো নয়, পথ কুকুরদের টিকাকরণ, চিকিৎসা এবং সুরক্ষার বিষয়েও স্কুল কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগী হতে হবে। ২৪ জুন, সোমবার থেকে এই নির্দেশ কার্যকর হওয়ার কথা।
শিক্ষকদের একাংশের ক্ষোভ ও আপত্তি
এই নির্দেশিকা নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন এবং প্রধান শিক্ষকদের একাংশ তীব্র আপত্তি তুলেছেন। তাঁদের দাবি, শিক্ষকের অভাবে অনেক স্কুলেই ক্লাস ঠিকভাবে পরিচালনা করা যাচ্ছে না। এর মধ্যে কুকুরদের খাওয়ানো এবং তাদের দেখভালের দায়িত্ব শিক্ষকদের উপর চাপিয়ে দেওয়া অন্যায়।
কয়েকজন প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, কোনওভাবে মিড-ডে-মিল চালানো যায়, সেখানে কুকুরদের জন্য বরাদ্দ না বাড়িয়ে এই নির্দেশ অযৌক্তিক। এখন কুকুর খাওয়াতে শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে দেখছি!”
পশুপ্রেমীদের ভিন্ন মত
অন্যদিকে পশুপ্রেমী সংগঠন ও ব্যক্তিরা এই সিদ্ধান্তকে মানবিক এবং ইতিবাচক বলে ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁদের মতে, বহু স্কুলেই বেঁচে যাওয়া খাবার এমনিতেই কুকুরদের দেওয়া হতো। এখন এই প্রক্রিয়াটি সরকারি স্বীকৃতি পেল, এটিই প্রশংসনীয়।
দুই বিপরীত নীতির সংঘাত
উল্লেখযোগ্যভাবে, এর আগের নির্দেশিকায় স্কুল চত্বরে পথ কুকুরদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়েছিল। শিশুদের সুরক্ষার স্বার্থে কুকুরদের দূরে রাখতে, প্রজনন নিয়ন্ত্রণ ও আঘাত না করার বার্তা ছিল সেই নির্দেশিকায়। এখন নতুন নির্দেশিকা ঘিরে প্রশ্ন উঠছে, দু’টি বিপরীত নীতির মধ্যে সমন্বয় কীভাবে ঘটবে?