মুকুল রায় (Mukul Roy) কি তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরবেন? বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের পর বিভিন্ন ঘটনা ও মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে এই জল্পনা দানা বাঁধতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলে। তারপর সাম্প্রতিককালে মুকুল পুত্র শুভ্রাংশু রায়ের (Subhrangshu Roy) সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট ও বুধবার মুকুল রায়ের স্ত্রীকে হাসপাতালে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখতে যাওয়ার ঘটনাকে ঘিরে সেই জল্পনা আরও তীব্র আকার ধারন করেছে। আর এবার শুধু মুকুলই নয়, সঙ্গে শুভ্রাংশুও ফিরতে পারেন বলে গুঞ্জন বঙ্গ রাজনীতিতে। কিন্তু কী এমন ঘটল যে প্রায় ৪ বছর পর মুকুলের তৃণমূলে ফেরার জল্পনা তৈরি হল?
রাজনৈতিকমহলের একাংশ মনে করছে বঙ্গ বিজেপিতে দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) সঙ্গে মুকুল রায়ের অভ্যন্তরীণ 'ঠাণ্ডা লড়াই' কার্যত 'ওপেন সিক্রেট'। প্রকাশ্যে তাঁদের মধ্যে কোনও বিবাদ বা মতপার্থক্য সেভাবে দেখা না গেলেও রাজ্যের সাংগঠনিক স্তরে বরাবরই মুকুল রায় ও তাঁর অনুগামীদের চাপে রাখার চেষ্টা হয়েছে বলে মনে করেন কেউ কেউ। এমনকী দলের সর্বভারতীয় সহসভাপতি হওয়া সত্ত্বেও রাজ্যে মুকুল রায় সেভাবে গুরুত্ব পাননি বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের।
দলের সর্বভারতীয় সহসভাপতি হিসেবে সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার পর্বেও খুব বেশি দেখা যায়নি মুকুল রায়কে। এর কারণ হিসেবে রাজনৈতিকমহলের কেউ কেউ মনে করছেন, যেহেতু মুকুলকে কৃষ্ণনগর উত্তরের প্রার্থী করে বিজেপি (BJP), সেহেতু নিজের প্রচারেই সেখানে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। তাই দলের অন্যান্য প্রার্থীদের হয়ে সেভাবে প্রচার করতে পারেননি মুকুল। দলের এই পদক্ষেপও হয়ত মুকুল খুব একটা ভাল চোখে নেননি বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহালমহলের কেউ কেউ।
এছাড়া ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর দেখা গেল মুকুল রায় জিতলেও পরাজিত হয়েছেন শুভ্রাংশু। একইসঙ্গে বাংলায় পরাজিত হয়েছে বিজেপিও। সেক্ষেত্রে দল ক্ষমতায় না আসায় বীজপুরে হেরে স্বভাবতই শুভ্রাংশুর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। এদিকে আবার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা হওয়া সত্ত্বেও বিরোধী দলনেতার পদ দেওয়া হয়নি মুকুলকে। সেক্ষেত্রে মুকুল বাস্তবেই যদি তৃণমূলে (TMC) ফেরেন তাহলে তার নেপথ্যে এগুলিও কারণ হতে পারে বলে ধারনা কারও কারও। যদিও মুকুল বা শুভ্রাংশু নিজেরা অবশ্য এই বিষয়ে এখনও কিছুই বলেননি। সেক্ষেত্রে বাস্তবেই পিতা-পুত্রের আগামিদিনের অবস্থান কী হয় তা জানতে অপেক্ষা করতেই হবে।