Murshidabad Violence: থমথমে ধুলিয়ান। দিন কয়েক আগেই সেখানে যে ভয়ঙ্কর ঘটনাগুলি ঘটেছে, তার চিহ্ন সর্বত্র। কোথাও রাস্তার ধারে দোমড়া-মোচড়ানো টোটো -কারও আয়ের একমাত্র সম্বল। কোথাও পুড়ে ছাই কারও শখের মোটরসাইকেল। অগুনতি ভাঙাচোড়া দোকানঘর। সামনে শূন্য চোখে দাঁড়িয়ে ব্যবসায়ী। টাকাপয়সা, দোকানের জিনিস... আত্মবিশ্বাস -সবকিছুই হারিয়েছেন সেদিন।
এরইমধ্যে দেখা গেল এক ভাঙা শিবমন্দির। গোলাপি রঙের মন্দিরের দেওয়াল, দরজা, এমনকি শিবলিঙ্গও ভেঙে ফেলা হয়েছে। সেদিকে যেন একটানা তাকাতেও পারছেন না স্থানীয়রা। রোজ তো এই মন্দিরেই আসতেন তাঁরা। সেই মন্দিরের যে এমন পরিস্থিতি হবে, তা এখনও ভাবতে পারছেন না।
'বলল মন্দির ভাঙ তুই, নিজের হাতে'
সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বললেও, ভয়ে নিজের নাম, পরিচয় জানাতে চাইলেন না স্থানীয়রা। তাঁদের মধ্যেই একজন মুখে গামছা বেঁধে, পরিচয় গোপন রাখার শর্তে কথা বলতে রাজি হলেন। তিনিই বললেন, 'শনিবার ১২টার দিকে। আমাদের বাড়ি থেকে টেনে এই মন্দিরে আনা হয়। তারপর বলল মন্দির ভাঙ তুই, নিজের হাতে।'
তিনি জানালেন, ততক্ষণে তাঁদের ঘিরে অগুনতি বিক্ষোভকারী। তাঁর গলায় কেউ ধরে হেঁসো, কেউ পিস্তল, কেউ ধরেছেন তলোয়ার। 'ভাঙতেই হবে তোকে মন্দির। নয় তো জানে মেরে দেওয়া হবে,' তাঁর গলায় এখনও ভয়ের ছাপ স্পষ্ট।
'না বললে তোকে মেরে ফেলে দেব'
প্রথমে রাজি না হলেও শেষ পর্যন্ত প্রাণের ভয়ে বাধ্য হয়ে মন্দির ভাঙেন, দাবি ওই ব্যক্তির। এরপরেই আরও বড় দাবি করলেন তিনি। বললেন, 'এরপরেই আমাকে বলল, বল আল্লাহ-হু-আকবর। প্রথমে বলিনি, তারপর মারতে শুরু করে। বলল না বললে তোকে মেরে ফেলব। যতক্ষণ না বললাম ছাড়ল না। শেষে বাধ্য হয়ে বললাম।'
কতজন লোক ছিল? জানালেন, 'প্রায় ১,০০০ লোক ছিল'। ১৫ থেকে ৪০ বছর -সব বয়সের বিক্ষোভকারীরাই সেদিনের ভিড়ে ছিল, জানালেন তিনি।
কথা বলতে বলতে বারবার তাঁর গলা কেঁপে উঠছিল। কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে তাঁর পরিবার, পড়শিরা। দাওয়ায় আপন মনে খেলায় ব্যস্ত ছোট শিশুরা। আশেপাশের ধ্বংসাবশেষের মাঝে এ যেন বড়ই বেমানান। তাদের দিকেই তাকিয়ে মা-বাবারা। চোখে-মুখে অনিশ্চয়তার ছাপ স্পষ্ট।
দেখুন ভিডিও: