নদিয়া জেলার করিমপুর থানা এলাকায় ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর ও মর্মান্তিক ঘটনা। আনন্দপল্লী মধ্যপাড়ায় এক মা নিজের দুই সন্তানকে পাথরের নোড়া দিয়ে আঘাত করেন। ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে চার বছর বয়সী এক শিশুর, আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে আট বছর বয়সী আরেক শিশু।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত রিঙ্কি মজুমদার করিমপুরের বাসিন্দা সূর্য মজুমদারের স্ত্রী। তাঁদের দুই ছেলে— আট বছর বয়সী তোজো মজুমদার ও চার বছর বয়সী পিয়ন মজুমদার। হঠাৎই বৃহস্পতিবার সকালে রিঙ্কি তাঁর দুই সন্তানকে বাড়ির মশলা বাটার পাথরের নোড়া দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন।
শিশুদের আর্তনাদ শুনে বাবা সূর্য মজুমদার ছুটে এসে দেখেন দুই সন্তান রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছিল। চিকিৎসকরা ছোট ছেলে পিয়নকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর জখম অবস্থায় তোজোকে পাঠানো হয়েছে বহরমপুর মেডিকেল কলেজে, তার অবস্থাও সংকটজনক বলে জানা গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেছেন, রিঙ্কি মজুমদার দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক ভারসাম্যহীনতার সমস্যায় ভুগছিলেন। যদিও ওই কারণেই এমন নৃশংস কাণ্ড ঘটেছে কি না, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে করিমপুর থানার পুলিশ।
ঘটনার পর এলাকা জুড়ে তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়। প্রথমে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন অভিযুক্ত রিঙ্কি। পরে বৃহস্পতিবার সকালে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই মর্মান্তিক ঘটনার নেপথ্যে মানসিক অসুস্থতা নাকি অন্য কোনও কারণ, তা জানতে অভিযুক্তকে জেরা করছে পুলিশ।
স্থানীয় প্রশাসনের তরফেও শিশুদের উপর এমন নির্দয় হিংসার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। মৃত শিশুর দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে এবং পুলিশের তরফে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। এই হৃদয়বিদারক ঘটনার পর গোটা এলাকা শোকস্তব্ধ।