লোকসভা ভোটের মুখে অগ্নিগর্ভ নন্দীগ্রাম। রাস্তা অবরোধ,সংঘর্ষের সেই পুরোনো ছবি ফিরল সেখানে। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের হাতে খুন হয়েছেন তাঁদের মহিলা কর্মী রথীবালা আড়ি। এছাড়াও জখম ৭ বিজেপি কর্মী। ঘটনার অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে বিজেপি। বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে RAF।
বুধবার রাতে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ঘটনার পর আজ বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রাম দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিজেপি কর্মীরা টাযার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখায়, রাস্তা অবরোধ করে। নন্দীগ্রাম থানার সামনেও বিক্ষোভ দেখানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এসডিপিও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। রেয়াপাড়া ফাঁড়ির অফিসার ইনচার্জকে অপসারণের দাবিও করে বিজেপি। ভোটের দিন নন্দীগ্রামের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার দাবিও করা হয়।
তবে তারপরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যরা নন্দীগ্রামে পৌঁছে লাঠিচার্জ করে। সোনাচূড়ার একটি দোকানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়, এছাড়াও কয়েকটি দোকান ভাঙচুর চালানো হয়। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি সমর্থকরা টিএমসি সমর্থকদের দোকানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায়।
স্থানীয় তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ানের অভিযোগ, যে মনসাবাজারে ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে তৃণমূলের একটি ঝান্ডাও নেই। তবে কিছু সমর্থক আমাদের ওখানে থাকেন। ওরা (বিজেপি) রাত ১২টার পর গিয়ে আমাদের তৃণমূলের লোকেদের বাড়ি ভাঙচুর করে, মারধর করে। তা নিয়েই আদি এবং নব্য বিজেপির মধ্যে গন্ডগোল, মারামারি, ফাটাফাটি হয়। এক জনের মৃত্যু হয়েছে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। কোনও মৃত্যু সমর্থন করি না।
এদিকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানান, তিনি নন্দীগ্রামে যাবেন। নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন। নন্দীগ্রামের এই ঘটনা নিয়ে ট্যুইট করেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। তাঁর অভিযোগ, ১৬ মে হলদিয়ায় এক জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে হারের প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দেন। তিনি শুভেন্দু অধিকারীর কাছে হেরে গিয়েছিলেন। কিন্তু তবুও নির্লজ্জভাবে মুখ্যমন্ত্রীর হয়েছিলেন অন্য আসন থেকে জিতে। গণতন্ত্রে এ ধরনের সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয়।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামে পুলিশের গুলিতে ১৪ জন স্থানীয় লোক নিহত হয়। ঘটনার নেপথ্যে ছিল নন্দীগ্রামে বামফ্রন্ট সরকারের জমি অধিগ্রহণ। স্থানীয় লোকজন এর বিরোধিতা করেন। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে পুলিশ গুলি চালায়।