
উত্তরবঙ্গে হোটেল পাওয়া সমস্যা হতে চলেছে বাংলাদেশিদের জন্য। ওপার বাংলায় হিন্দু নির্যাতনের বিষয়টি নিয়ে এবার কড়া পদক্ষেপ করছেন উত্তরবঙ্গের হোটেল ব্যবসায়ীরা। মালদার পর এবার শিলিগুড়িও হাঁটতে চলেছে একই রাস্তায়। গতকালই মালদা হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের তরফে বাংলাদেশিদের জন্য হোটেলের দরজা বন্ধ করা হয়েছিল।
শিলিগুড়িতে হোটেল ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, দেশের স্বার্থে ব্যবসায় কিছুটা ক্ষতি স্বীকার করতে তাঁরা রাজি। তবে এই সিদ্ধান্ত এই প্রথম নয়। এর আগেও গত বছরের ডিসেম্বরে হোটেলে বাংলাদেশিদের নিয়ে এই একই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শিলিগুড়ির হোটেলগুলি।
এ প্রসঙ্গে bangla.aajtak.in-কে গ্রেটারস শিলিগুড়ি হোটেল ওউনারস'স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, "আমাদের এই সিদ্ধান্ত ২০২৪ সালের ৯ ডিসেম্বরে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তখন মেডিক্যাল ও স্টুডেন্টস ভিসায় আসা ব্যক্তিদের কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছিল। তবে সম্প্রতি বাংলাদেশে একাধিক ঘটনার পর, বিশেষ করে ভারত সরকার বেশ কিছু ভিস কেন্দ্র সাময়িক ভাবে বন্ধ করার পর আমরাও হোটেলের দরজা বাংলাদেশিদের জন্য বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সংগঠনের সদস্যদের মধ্যে ভোটাভুটির পরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।"
গতকাল মালদা হোটেল ওউনারস'স অ্যাসোশিয়নের সভাপতি কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী জানিয়েছিলেন, শিলিগুড়িতে ভিসা অফিস বন্ধ ও বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণেই তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারাও হোটেল মালিকদের এই পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়েছে। বিজেপি নেতা গৌর চন্দ্র মণ্ডল সীমান্তের ওপার থেকে এদেশে আসা ব্যক্তিদের জন্য হোটেলের দরজা কঠোরভাবে বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন। অন্যদিকে, তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র আশীষ কুণ্ডু জানান, হোটেল মালিকরা তাঁদের অবস্থান স্পষ্ট করলেও, এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের কিছু করার নেই। কারণ বিদেশি নাগরিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ক্ষেত্রে নীতি নির্ধারণ করে কেন্দ্র সরকার, এক্ষেত্রে রাজ্য সরকার বিদেশি নাগরিকদের আসা ঠেকাতে পারে না।
সূত্রের মারফত জানা গিয়েছে, যেভাবে শিলিগুড়ির চিকেন নেক নিয়ে বাংলাদেশের কিছু ব্যক্তি টানা হুমকি দিয়ে আসছে, তার প্রেক্ষিতেই এবার শিলিগুড়িতেও এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশের স্বার্থরক্ষার জন্য তাঁরা লস করতেও রাজি বলছেন মালিকরা। যদিও শীতের মরশুম হওয়ায় সারা দেশ থেকে, বিশেষ করে কলকাতা থেকে বহু মানুষ এখন নর্থ বেঙ্গলমুখী। ফলে হোটেল মালিকদের লস হওয়ার তেমন কোনও সম্ভাবনা নেই।
জানা গিয়েছে, শিলিগুড়িতে যে হোটেল সংগঠনের তরফে এই ডাক দেওয়া হয়েছে, তাদের হাতে ১৮০টি হোটেল রয়েছে। ওই হোটেলগুলিই এই নিষেধাজ্ঞা কড়া ভাবে মেনে চলবে। পাশাপাশি অন্য হোটেলগুলিকেও দেশের স্বার্থে এগিয়ে আসার ডাক দেওয়া হয়েছে।