বিধানসভা থেকে ৩০ দিনের জন্য সাসপেন্ড বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সাসপেন্ড আরও ৩ বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল, বঙ্কিম ঘোষ ও বিশ্বনাথ কারকও। শুভেন্দুর দাবি, সরস্বতী পুজোয় দিকে দিকে মূর্তি ভাঙার প্রসঙ্গ তুলে ধরা, হিন্দুদের হয়ে কথা বলার জন্যই এই সাসপেনশন। আগামিকাল বিধানসভার বাইরে ধর্ণা করবে বিজেপি। একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে বয়কট করারও ডাক দেন শুভেন্দু। বর্তমান সরকারকে হিন্দু বিরোধী সরকার বলে নিশানা করেন বিরোধী দলনেতা।
সোমবার সাসপেন্ড হওয়ার পর বিধানসভার বাইরে এসে ক্ষোভ উগরে দেন শুভেন্দু। বলেন, "রাজ্যে অগণতান্ত্রিক সরকার চলছে। বাংলাদেশে ইউনূস যা করছে এখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দল একই কাজ করছে। বিধানসভায় কোনও প্রশ্নের উত্তর দেন না মুখ্যমন্ত্রী। আমরা দাবি করেছিলাম সরস্বতী আরাধনায় যে জিহাদি হামলা, যেভাবে হাইকোর্টের দারস্থ হওয়া, যেভাবে সশস্ত্র পুলিশ, আইপিএসদের নেতৃত্বে তাঁদের উপস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুজো হয়েছে। আমরা ব্রিটিশদের সময়ে বহরমপুর সেন্ট্রাল জেলে সরস্বতী পুজোর বন্ধের ফতোয়া অগ্রাহ্য করেছিলেন নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু, তা বইতে পড়েছি। সরস্বতী পুজোয় বাধা পড়েছে এটা বলতে গিয়ে আমাকে বাইরে রাখা হয়েছে। এই সরকার আনসারুল্লা বাংলার সরকার।"
বিরোধী দলনেতা সহ ৪ বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড প্রসঙ্গে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "যে সরকারি কাগজগুলো সরবরাহ করা হয়েছিল, তা ছিঁড়ে আমার চেয়ারের দিকে ছুঁড়ে ছুঁড়ে মেরেছে। এই আচরণ নিন্দনীয়। এতে মোশন আনেন নির্মল ঘোষ। যে কারণে তাঁদের ৩০ দিনের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে।"
এর উত্তরে শুভেন্দু বলেন, "কাগজ কেউ ছেঁড়েনি। এই অ্যাডজর্ন মানি না। সরস্বতী পুজোয় ব়্যাফ কেন নামাতে হয়েছে? এখানে একটাই কারণ হিন্দুদের পক্ষে বলা যাবে না। উনি সমালোচনা শনতে চান না। এই সরকার চাকরি দিতে পারেনি, শিল্প আনতে পারেনি। আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পারেনি। পাশাপাশি এই সরকার হিন্দু বিরোধী সরকার।"
প্রসঙ্গত, সরস্বতী পুজোয় নদিয়ায় মূর্তি ভেঙে দেওয়ার ঘটনাকে ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়। চাপড়া থানার কলিঙ্গ এলাকার চড়ুই টিপি গ্রামে সরস্বতী ঠাকুরের মূর্তি ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এদিন এই খবরের প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বিধানসভায় বিক্ষোভ দেখান বিজেপির বিধায়কেরা।
এছাড়াও, এবারের সরস্বতী পুজোয় যোগেশচন্দ্র ল কলেজে সরস্বতী পুজো করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাতে তোলপাড় হয় বাংলা। এরপর পুলিশি নিরাপত্তায় কলেজে সরস্বতী পুজো করার নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত। তাদের অভিযোগ ছিল, তাঁরা যেখানে সরস্বতী পুজোর আয়োজন করেন, সেই জায়গা বহিরাগতরা দখল করে নিয়েছে। কলেজে আতঙ্কের পরিবেশ রয়েছে অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়। এরপর পুলিশি নিরাপত্তায় হয় সরস্বতী পুজো। এই বিষয়গুলি তুলে এদিন বিধানসভায় তুলে ধরেন বিরোধী দলনেতা। যার জেরে এই সানপেনশন বলে দাবি শুভেন্দুর।