কসবার কলেজে ছাত্রীকে গণধর্ষণ কাণ্ডে যখন উত্তাল গোটা রাজ্য, তখন মুর্শিদাবাদে ভারত সেবাশ্রমের কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধেও ধর্ষণের অভিযোগ। যার নির্যাস, মঙ্গলবার তাঁকে থানায় হাজিরার নোটিশ দিল নবগ্রাম থানার পুলিশ।
কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগে তোলপাড় মুর্শিদাবাদ। পরিচিত মুখ, সমাজসেবার জন্য পদ্মশ্রী সম্মানপ্রাপ্ত স্বামী প্রদীপ্তানন্দ ওরফে কার্তিক মহারাজ-এর বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং জোর করে গর্ভপাত ঘটানোর অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই এবার তাঁকে থানায় হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে নবগ্রাম থানার পুলিশ।
আশ্রমে গিয়ে পুলিশি তৎপরতা
সোমবার দুপুরে নবগ্রাম থানার এক আধিকারিক যান বেলডাঙার ভারত সেবাশ্রম সংঘের শাখা কার্যালয়ে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, কার্তিক মহারাজকে ১ জুলাই, মঙ্গলবার থানায় এসে জিজ্ঞাসাবাদে অংশ নিতে বলা হয়েছে। যদিও ওই সময় আশ্রমে ছিলেন না কার্তিক মহারাজ, তাই পুলিশের পক্ষ থেকে একটি লিখিত নোটিস তুলে দেওয়া হয় আশ্রম কর্তৃপক্ষের হাতে।
অভিযোগকারিণীর বিস্ফোরক দাবি
ঘটনার সূত্রপাত বছর দশেক আগের। অভিযোগকারী এক মহিলার দাবি, ২০১৩ সালে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় নবগ্রামের এক আশ্রম-সংলগ্ন স্কুলে। সেখানে তাঁকে শিক্ষিকা হিসেবে নিযুক্ত করা হয় এবং থাকার জন্য একটি কক্ষও দেওয়া হয়। কিন্তু কিছুকাল পর থেকেই পরিস্থিতি বদলাতে থাকে। মহিলার অভিযোগ, এক রাতে কার্তিক মহারাজ সেই ঘরে এসে তাঁকে শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করেন। প্রথমে প্রতিরোধ করলেও, ভয়ে-চাপে ও সামাজিক অবস্থানকে মাথায় রেখে তিনি চুপ থাকেন। অভিযোগ, এরপর থেকে নিয়মিত শারীরিক নির্যাতন চলতে থাকে তাঁর উপর। টানা ৬ মাস ১২ বার ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ। এমনকী, তিনি অন্তঃসত্ত্বা হলে বিনা অনুমতিতে তাঁর গর্ভপাত ঘটানো হয় বলেও লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন ওই মহিলা।
নবগ্রাম থানার এক আধিকারিক বলেন, 'একজন মহিলা যেভাবে ধারাবাহিক নিপীড়নের অভিযোগ করেছেন, সেটিকে গুরুত্ব দিয়েই তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক প্রমাণপত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাই, সেই কারণেই নোটিশ দেওয়া হয়েছে।'
অন্যদিকে, যাবতীয় অভিযোগকে ভুয়ো বলেই দাবি করেছেন কার্তিক মহারাজ। তাঁর কথায়, 'আমি সন্ন্যাসী মানুষ। জীবনে এমন বাধা, অপবাদ আসে। এটা আমি খুব একটা অস্বাভাবিক বলে মনে করি না।'