সোমবার মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন ব্যবহারের অভিযোগ নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়েরের অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি হতে পারে। আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী ও আইনজীবী ফিরোজ এডুলজির দাবি, 'রাজ্যের একাধিক সরকারি হাসপাতালে কালো তালিকাভুক্ত স্যালাইন ব্যাবহারের ফলে রোগীর মৃত্যু হচ্ছে। অবিলম্বে এই ঘটনার তদন্ত করা হোক।' ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি করা হয়েছে জনস্বার্থ মামলাতে।
রবিবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে যান জুন মালিয়া। গত সপ্তাহে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইনে হাসপাতালে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। গুরুতর অসুস্থ একাধিক। এমন আবহে হাসপাতালের বর্তমান পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন সাংসদ। মুখ্যমন্ত্রী পুরো বিষয়টি দেখছেন বলেও আশ্বাস দিলেন জুন মালিয়া। যদিও হাসপাতালের চিকিৎসকরা নিজেরাই আর সরকারি স্যালাইনে ভরসা করতে পারছেন না। হাসপাতালের বাইরে থেকে স্যালাইন কিনে আনার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। নয় তো মুচলেকা দিয়ে সরকারি স্যালাইন ব্যবহার করতে বলছেন বলে দাবি রোগীর পরিজনের।
এক প্রসূতির মৃত্যু ও ৪ জনের গুরুতর অসুস্থতার ঘটনায় মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইনের বিরুদ্ধেই অভিযোগ তুলছেন পরিজনরা। এমন পরিস্থিতিতে সেই বিতর্কিত স্যালাইন ব্যবহার বন্ধ রেখেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আপাতত রোগীর পরিজনদের বাইরে থেকে অন্য় ব্র্যান্ডের স্যালাইন কিনে আনার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। ফলে বাইরে থেকে নিজেদের খরচেই স্যালাইন কিনতে হচ্ছে তাঁদের।
এমনই এক রোগীর পরিজনের সঙ্গে কথা হল সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের। বাইরে থেকে স্যালাইন কিনে হাসপাতালে ঢুকছিলেন তিনি। দিবাকর মুড়িয়ান নামের ওই ব্যক্তি জানালেন, তিনি ঝাড়গ্রাম থেকে এসেছেন। বললেন, 'আমার নাতনির বুকে কফ জমে সমস্যা হয়েছে। স্যালাইনের প্রয়োজন ছিল। সেখানে ডাক্তাররা জানিয়েছেন হাসপাতালে সরবরাহ করা স্যালাইন দিতে পারি, তাতে আপনাদের মুচলেকা লিখে দিতে হবে সমস্যা হলে আমাদের কোনওভাবে দায়ী করা হবে না। না হলে বাইরে থেকে কিনে আনতে পারেন। তাই আমরা বাইরে থেকে স্যালাইন কিনে এনে ডাক্তারদের দিচ্ছি।'
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের প্রসূতি বিভাগ 'মাতৃমা'তে ভর্তি ছিলেন প্রয়াত রোগীনি। সেখানেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন আরও ৪ জন। এদিন সেই মাতৃমার রোগীদের সঙ্গে দেখা করেন জুন মালিয়া। চিকিৎসকদের সঙ্গেও বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। এরপর জানালেন, 'পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে কারও গাফিলতি প্রমাণ হলে। পুরো বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী নিজে দেখছেন। তবে আপাতত রোগীদের বাইরে থেকে স্যালাইন এনে দিতে হচ্ছে। সবটাই স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা হচ্ছে। তবে আমি এখানে যা দেখেছি সবটাই আবার মুখ্যমন্ত্রীকে বলব।'
উল্লেখ্য, সোমবার মেয়াদ উত্তীর্ণ স্যালাইন ব্যবহারের অভিযোগ নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়েরের অনুমতি দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে। সোমবার আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী ও আইনজীবী ফিরোজ এডুলজির দাবি, 'রাজ্যের একাধিক সরকারি হাসপাতালে কালো তালিকাভুক্ত স্যালাইন ব্যাবহারের ফলে রোগীর মৃত্যু হচ্ছে। অবিলম্বে এই ঘটনার তদন্ত করা হোক।'