আজ পয়লা বৈশাখ। বাংলার নতুন বছর শুরু হল। আর এই দিনেই রাজ্যজুড়ে 'পশ্চিমবঙ্গ দিবস' পালন করবে তৃণমূল। এই কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলা অস্মিতায় শান দিতে চায় বাংলার শাসকদল। বুথস্তর পর্যন্ত সব এলাকায় এই কর্মসূচি পালন করতে হবে বলে আগেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গ দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভ্রাতৃত্ব-বন্ধনের বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী, যা রাজ্যে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে তাৎপর্যপূর্ণ।
এক্স হ্যান্ডলে এদিন মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ''আমি বাংলায় গান গাই...'‘বাংলা দিবস’ – এ সকল নাগরিককে জানাই শুভনন্দন এবং ছোট ছোট ভাইবোনেদের জানাই অনেক শুভেচ্ছা। আরও বিকশিত হোক রাজ্যের ঐতিহ্যময় সংস্কৃতি, আরও সুদৃঢ় হোক রাজ্যবাসীর ভ্রাতৃত্ব-বন্ধন।' (বানান অপরিবর্তিত)।
বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন উল্লেখযোগ্য হতে চলেছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। বাংলা অস্মিতাকে উদ্বুদ্ধ করতেই এই উদ্যোগ বলে খবর। পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনের জন্য তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতৃত্বকে নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। রাজ্য সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু করতে বলা হয়েছে। অনুষ্ঠান শেষ হবে জাতীয় সঙ্গীত দিয়ে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে পশ্চিমবঙ্গ দিবস সরকারি ভাবে ঘোষণা করা হলেও ২০২৪ সালে লোকসভা ভোটের কারণে দলগত ভাবে তা পালন করতে পারেনি। অন্য দিকে, ২০ জুন পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসেবে পালন করে বিজেপি। তাদের মতে, ওই দিনই পূর্ব পাকিস্তান থেকে পশ্চিমবঙ্গকে আলাদা করতে সফল হয়েছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়।
ছাব্বিশে বাংলাকে পাখির চোখ করেছে বিজেপি। হিন্দুত্বের লাইনে গিয়ে ভোটের রণনীতি সাজাচ্ছে পদ্ম শিবির। এই আবহে পশ্চিমবঙ্গ দিবস উদযাপনের মাধ্যমে বাংলার অস্মিতাকে উদ্বুদ্ধ করতে চাইছে তৃণমূল। ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে টানটান লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত তৃণমূলের জয়ের দাপটে বাংলা দখলের স্বপ্নভঙ্গ হয়ে যায় বিজেপির। ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনেও ব্যর্থ হতে হয়েছে পদ্ম শিবিরকে। এবার লক্ষ্য, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন। এমন প্রেক্ষাপটে বিজেপির হিন্দুত্বের রণনীতির পাল্টা পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করে বাংলার গরিমাকে তুলে ধরতে চাইছে শাসকদল।