কোথাও ৩০০, কোথাও ৩২০ টাকা বস্তা। আলুর দাম তলানিতে পৌঁছে যাওয়াতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে রাজ্যের চাষিরা। এবছর আলু ওঠার সময় মাঠে আলুর দাম খুব বেশি ছিল না। ৪০০ থেকে সাড়ে ৪৫০ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করেছিল। পরে ভাল দাম পাওয়ার আশায় বহু চাষি কোল্ড স্টোরে আলু মজুত করেছেন। এখন ধান চাষের সময়, এই সময় আলু বিক্রির টাকায় অনেকেই ধান চাষের খরচ সামলান। কিন্তু, আলুর দাম মারাত্মক কমে গিয়েছে। তোলার সময়ের থেকে দাম কমে গিয়েছে। কোল্ড স্টোরে ফ্রি বন্ড বিক্রি চ্ছে ৩০০ টাকা থেকে ৩২০ টাকা, খুব বেশি হলে সাড়ে তিনশো টাকা। অর্থাৎ আলুর দাম কেজি প্রতি ছয়-সাত টাকা পাচ্ছেন চাষিরা। তাতেই চরম ক্ষতির মুখে তাঁরা।
ধান চাষের খরচ সামলাতে অনেক চাষি কোল্ড স্টোরে রাখা আলু এই সময় বিক্রি করে দেন। যদিও দাম কমে যাওয়াতে তাঁরা অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন। অনেকে চাষি বলছেন, এর থেকে মাঠে আলু বিক্রি করে দিলে লাভ হত। কারণ, নভেম্বর বা ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের মতো তাঁরা কোল্ড স্টোরে আলু মজুত রাখতে পারেন না। চাষের খরচের জন্য তা আগেই বিক্রি করতে হয়।
এদিকে, চাষিরা দাম না পেলেও কলকাতায় খোলা বাজারে আলু কেজি প্রতি ১৮ থেকে ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কোথাও কোথাও আবার দাম আরও বেশি। চাষিরা কেজি প্রতি ১০ টাকাও দাম পাচ্ছেন না। খোলা বাজারে সেভাবে আলুর দাম কমছে না। অথচ চাষিরা দাম পাচ্ছে না। এই দাম থাকলে খরচও উঠে আসবে না। পরে ব্যবসায়ীরা লাভ করে নেবেন। যদিও, হুগলির তারকেশ্বরের আলু ব্যবসায়ী প্রভাত রং জানিয়েছেন, এখনও কোল্ড স্টোরে ৭৫ শতাংশ আলু রয়ে গিয়েছে। আনুমানিক ২৫ শতাংশ আলু বেরিয়েছি। তাই আগামীদিনে কী পরিস্থিতি হবে তা বলা যাচ্ছে না। রাজ্যের আলু অন্য রাজ্যে পাঠানো হলে দাম কিছুটা বাড়তে পারে। দাম কমে গেলে চাষিরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
এদিকে, চাষিরা দাম না পেলেও খোলা বাজারে আলু বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। যদিও এটা ঠিক নয় বলেই মনে করছেন অনেকে। তাঁদের কথায়, আলুর দামের ফারাক এতটা হওয়া উচিত নয়। ক্রেতারা বেশি দাম দিয়ে আলু কিনছেন। চাষিদের আরও দাম পাওয়া উচিত। টাস্ক ফোর্সের সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে স্বীকার করেছেন যে আলুর দাম কমে গিয়েছে। চাষিদের ক্ষতিও হচ্ছে। সরকারের কাছে এনিয়ে খবর আছেও বলেও জানিয়েছেন রবীন্দ্রনাথবাবু। তিনি বলেন, 'আমরা সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলব। তিনি নিশ্চয় এনিয়ে মুখ্যসচিব ও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন। সরকারকে সামগ্রিক ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এবার আলুর বাম্পার ফল হয়েছে। বেশিটাই কোল্ড স্টোরে আছে। সেই কারণে দাম একটু কমের দিকেই আছে। মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চয় কোনও পদক্ষেপ করবেন।'