SSC নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একসঙ্গে প্রায় ২৬ হাজার চাকরি যাওয়ার পরে এবার মাথার উপর খাঁড়া ঝুলছে প্রাথমিক শিক্ষকদের। আগামী ২৮ এপ্রিল থেকে প্রাথমিকে ৩২ হাজার চাকরি বাতিল মামলার পূর্ণাঙ্গ শুনানি শুরু হবে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের এজলাসে। এহেন পরিস্থিতিতে ফের সিঁদুরে মেঘ দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার নির্যাস, আজ অর্থাত্ মঙ্গলবার প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চাকরি বাতিল মামলা নিয়েও বিরক্তি প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই প্রমাদ গুনতে শুরু করে দিয়েছেন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল মামলার শুনানি
এই মামলার গোড়ায় গেলে দেখা যাবে, ২০২৩ সালের ১৬ মে কলকাতা হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিকের ৩২ হাজার শিক্ষক পদ বাতিল করতে হবে। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে আপিল করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এবং অনেক চাকরি হারানো শিক্ষক-শিক্ষিকাও। পরে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সেই রায়ে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয়। তবে একই সঙ্গে, ৩২ হাজার পদে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে নির্দেশও দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এই নির্দেশ নিয়েও বিতর্ক হয় এবং পরবর্তীতে তা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। সেখানে নতুন নিয়োগে স্থগিতাদেশ দেয় দেশের সর্বোচ্চ আদালত এবং পুরো মামলাটি আবার কলকাতা হাইকোর্টে পাঠিয়ে দেয়।
মামলা নিয়ে বিরোধীদের নিশানা মমতার
২০১৪ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের TET পরীক্ষায় ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছিল। সেই দুর্নীতির মামলা প্রসঙ্গে এদিন মমতা বললেন, 'যারা চাকরি খাচ্ছে, তাদের উপর ভরসা করবেন না। যারা চাকরি দেবে, তাদের উপর ভরসা করুন। যে কোনও ব্যাপারে কথায় কথায় কোর্টে গিয়ে শুধু পিল খায়। পিল মানে, পাবলিক ইন্টারেস্ট লিটিগেশন। পিল পিল করে। PIL করে করে বাংলার সর্বনাশ করছে। এর জন্য কোর্ট দায়ী নয়। যারা মুখে বড় বড় কথা বলে, তারা কোনও দিন মানুষের জন্য কিছু করে না। আমরা চাকরি দেব, আর ওরা চাকরি খাবে? আবার দেখছি হাইকোর্টে একটা কেস করে বসে আছে। ৩৫ হাজার প্রাথমিক শিক্ষককে ছাঁটাই করতে হবে। এরা কারা? যারা একদিন আমাদের মন্ত্রিসভায় ছিল, তারাও কম লোককে চাকরি দেয়নি।'
২০১৪-র টেট দুর্নীতির সিবিআইয়ের করা মামলায়, এখনও পর্যন্ত ১১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। তাঁদের মধ্যে ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।