
পশ্চিমবঙ্গের স্কুল শিক্ষা বিভাগ সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে বড়সড় পদক্ষেপ নিল। সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়েছে যে, মোট ২৩,১৪৫ জন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে, 'রেশনালাইজেশন প্রক্রিয়া'-র আওতায়।
জারি করা সরকারি আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে যে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে ২৩,১৪৫ জন উদ্বৃত্ত শিক্ষক রয়েছেন, অন্যদিকে বিভিন্ন জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২৩,৯৬২টি শূন্যপদ রয়েছে। এই প্রেক্ষিতে শিক্ষকদের পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে বিদ্যালয়গুলির কার্যক্রম আরও সুষ্ঠুভাবে চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আদেশে বলা হয়েছে, 'বিভিন্ন জেলার মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষক ঘাটতি পূরণের স্বার্থে আন্তঃজেলা রেশনালাইজেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। এটি বিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিচালনা ও পড়ুয়াদের স্বার্থে অপরিহার্য।'
অনিয়মিত নিয়োগের পর ব্যাহত শিক্ষা
রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্কে জর্জরিত। ২০২১ সালে প্রায় ৯,০০০ শিক্ষক নিয়োগের পর ২০২৪ সালেও সমান সংখ্যক নিয়োগ করা হলেও, নিয়োগে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এর ফলেই ২০২২ ও ২০২৩ সালে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে স্থগিত হয়ে যায়।
এই নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে সিবিআই ২০২২ সালের অক্টোবরে গ্রেফতার করে, যিনি বর্তমানে জামিনে মুক্ত।
শিক্ষক সংগঠনের প্রতিক্রিয়া
বেঙ্গল টিচার্স অ্যান্ড এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'একটি অনিয়মিত নিয়োগ প্রক্রিয়ার কারণে শূন্যপদ ক্রমাগত বাড়ছে। শিক্ষকদের অবসর এবং নিয়োগে বিলম্বের ফলে অনেক স্কুলে পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে। তাই সরকারের এই উদ্বৃত্ত শিক্ষক বদলির পদক্ষেপ সময়োপযোগী।'
নতুন খসড়া নিয়োগবিধি প্রকাশ
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন, শীঘ্রই ১৩,০০০-এরও বেশি শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত খসড়া নিয়োগবিধিতে স্বচ্ছতা বাড়ানোর উপর জোর দেওয়া হয়েছে। নতুন বিধি অনুযায়ী TET পরীক্ষার গুরুত্ব বাড়ানো হবে, এবং একাডেমিক স্কোরের ভূমিকা কিছুটা কমানো হবে।