আরজি করে চিকিৎসক খুন-ধর্ষণ কাণ্ডের পাঁচদিন পেরিয়েছে। কলকাতা সহ রাজ্য ও দেশের একাধিক সরকারি হাসপাতালে আন্দোলনে চিকিৎসা ব্যবস্থা কার্যত ব্যাহত। এই ঘটনর আসল মাথাকে না ধরা হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ইন্টার্ন, ট্রেনি, জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিবাদে টানা চারদিন ধরে আন্দোলন চলছে।
গত শুক্রবার ভোর রাতে ৩১ বছর বয়সী তরুণীচিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার ক্ষোভ দেশব্যাপী ক্ষোভের ছড়িয়ে পড়ে। প্রাথমিক তদন্ত এবং হাসপাতাল চত্বরে সিসিটিভি ক্যামেরার পরীক্ষার পর, কলকাতা পুলিশ সঞ্জয় রায় নামে এক সিভিক ভলেন্টিয়ারকে গ্রেফতার করে। অপরাধ স্বীকারও করেন তিনি। আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে এই বিষয়ে অবহেলার জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে। সেদিন রাতে ঠিক কী কী ঘটেছিল? কী করার পর ধর্ষণ-খুনের ঘটনা?
এখনও পর্যন্ত যা যা ঘটেছে দেখে নিন-
৫-৮ অগাস্ট: সঞ্জয় রায় পুলিশ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির মিটিংয়ে যোগ দিতে খড়্গপুরের মিটিংয়ে যায়। ৫ আগস্ট থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সেখানে ছিল।
৮ অগাস্ট সকাল: ৮ আগস্ট সকালে কলকাতায় ফিরে আসার পর, সঞ্জয় রায় প্রথমে আরজি কর হাসপাতালে যায়, সেখানে দালাল হিসেবে কাজ করত ধৃত। রোগীদের ভর্তির সুবিধার্থে তার আর জি করে অবাধ যাতায়াত ছিল। সেদিনও তাই। সিসিটিভিতে দেখা যায় রোগী ভর্তি করার পর হাসপাতাল থেকে চলে গিয়ে পরে রাতে আবার ফিরে আসে।
৮ অগাস্ট, রাত: প্রায় ১১ টার দিকে, সঞ্জয় একই রোগীকে এক্স-রে করতে সহায়তা করতে আরজি কর হাসপাতালে ফিরে আসে। এ সময় রোগীর পরিবার তার সঙ্গে ছিলেন। তাদের সঙ্গে কয়েক মিনিট কাটিয়ে সঞ্জয় হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যায়।
৯ অগাস্ট, ভোর: সঞ্জয় আবার হাসপাতালে ফিরে আসে ১ টার দিকে অন্য রোগীকে সাহায্য করার জন্য যার অস্ত্রোপচার নির্ধারিত ছিল। এই রোগীকে সহায়তা করার পরে, তিনি হাসপাতালের প্রাঙ্গনেই থেকে যায়, যেখানে তিনি হাসপাতাল বিল্ডিংয়ের পিছনে রোগীর আত্মীয়দের একজনের সঙ্গে মদ্যপান করে। সেখানে রোগীর পরিবারকে আর্থিক সহায়তাও করে এবং তাদের বাড়ি যাওয়ার জন্য একটি উবের বাইকের ব্যবস্থা করে।
৯ অগাস্ট, মধ্যরাত ৩ টে: আনুমানিক ৩টেয়, সঞ্জয় হাসপাতালের চেস্ট মেডিসিনর তিন তলায় ফিরে যায়। কয়েক মিনিটের মধ্যে সেমিনার হলে প্রবেশ করে যেখানে ওই মহিলা চিকিৎসক বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। এখানেই তাঁকে ধর্ষণ ও খুন করার অভিযোগ রয়েছে। প্রায় ৪০-৪৫ মিনিট পর সঞ্জয় সেমিনার হল থেকে বেরিয়ে যায়।
৯ অগাস্ট, ভোর সাড়ে ৪টে: সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে সঞ্জয় প্রায় ৪টে ৩৭ নাগাদ হাসপাতাল প্রাঙ্গণ থেকে বের হচ্ছন। তারপর নিজের ব্যারাকে ফিরে এসে ঘুমোতে যায়।
সেদিন সকালে: কলকাতা পুলিশ, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে এবং তার সন্দেহজনক কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করে, সঞ্জয় রায়কে ব্যারাক থেকে আটক করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাসপাতালে ফিরিয়ে আনা হয়।
৯ অগাস্ট, সন্ধে: এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর, পুলিশ সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করে।