কয়েক সপ্তাহের ক্ষোভ, বাঁধ ভাঙা বিক্ষোভ। বুধবার রাতে ভেঙে কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে পৌঁছনো হাজার হাজার ভিড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। 'বিচার'-এর দাবিতে আন্দোলনরত জনচা হঠাৎ পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে। তাদের হাতে ন্যায়বিচারের দাবিতে প্ল্যাকার্ডের পরিবর্তে লাঠিসোঁটা এবং প্রতিরক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ সদস্যদের প্রাণ বাঁচাতে ছুটে যেতে দেখা গেছে।
অগাস্ট ১৪-তে গভীর রাতে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা প্রকাশ্যএ আসে। কেন, কখন এবং কীভাবে এই ঘটনা ঘটে তা ১১ মিনিটের ভিডিওতে দেখা যায়। গত ৮ আগস্ট গভীর রাতে এক চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় জনগণ কতটা ক্ষুব্ধ।
রাত ১২টায় ভিড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়
কলকাতার হাসপাতালে ধর্ষণ-হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে ১৪ ও ১৫ অগাস্টের মধ্যবর্তী রাতে হাসপাতালের বাইরে বিক্ষোভ করার জন্য অনেক বাম সংগঠনদের কাছে আবেদন করেছিল। এই আবেদনের পর রাত ১২টা নাগাদ আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের বাইরে প্রচুর মানুষের ভিড় দেখা যায়। লোকজন জোরে জোরে স্লোগান দিচ্ছিল। হাসপাতালের সামনে ব্যারিকেডও বসিয়েছে পুলিশ।
স্লোগান, ক্ষোভে উত্তাল পরিস্থিতি
হাতে মোমবাতি, মুখে ক্ষোভ আর মুখে হতাশা ব্যারিকেডের ওপারে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন পুলিশ সদস্যের। ভিডিওতে দেখা যায়, বহু মানুষকে স্লোগান দিতে। ব্যারিকেড ভেঙে কয়েকজন পুলিশেরা ভিড়ের মুখোমুখি কার্যত নীরব দর্শক হয়েই রইল।
এরপর হাসপাতাল চত্বরে শুরু হয় ভাঙচুর
ভিডিওতে দেখা যায়, ব্যারিকেড ভাঙার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হতে। এর পরে জনতা হাসপাতালে প্রবেশ করে, হট্টগোল করে, হাসপাতালের কাঁচ ভেঙে দেয়, আশেপাশে পার্ক করা গাড়ি এবং যা কিছু কাছে পায় সব ভেঙে ফেলে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে, পুলিশ সদস্যরাও ছুটে যান ভিতরে।
মাটিতে পড়ে থাকে ন্যায়-বিচারের প্ল্যাকার্ড
জনতার এই হামলার পর প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভে কিছুদিন ধরে ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন ভূলুন্ঠিত হয়ে পড়ে।
বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা এমার্জেন্সি বিভাগে তুমূল হামলা চালায়। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে। এ সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হন।
কলকাতা পুলিশ বলেছে, কিছু অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা আরজি কর মেডিকেল কলেজে ভাঙচুর চালায়। প্রায় ৪০ জনের একটি দল বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছিল। এই একই লোকেরা হাসপাতালে হিংসা চালায়। এ সময় পুলিশের গাড়ি ও কিছু দু'চাকার গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার পর দেশজুড়ে ক্ষোভ চলছে। মামলার তদন্ত চলছে সিবিআইয়ের হাতে।