ফের রবিনসন স্ট্রিট কাণ্ডের ছায়া রাজ্যে। এবার হাওড়ায়। হাওড়ার চ্যাটার্জীহাট থানার অন্তর্গত ওলাবিবি তলা এলাকায় শ্যালিকা ও জামাইবাবুর মৃতদেহ পাশাপাশি পড়ে রয়েছে। আর তাঁদের মৃতদেহ আগলে পাশে বসে রয়েছেন মৃত ব্যক্তির স্ত্রী এবং মৃত মহিলার দিদি। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ব্যপক চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। খবর দেওয়া হয় পুলিশে।
দেখতে না পেয়ে কৌতুহল এলাকাবাসীর
স্থানীয় সূত্রে খবর, বেশ কিছুদিন ধরেই ওই পরিবারের কাউকে দেখতে পাচ্ছিলেন না এলাকার বাসিন্দারা। নিয়মিত বাজার যাওয়া কিংবা মর্নিং ওয়াকে দেখা যায়নি মৃত নীতিশরঞ্জন মণ্ডলকে। প্রথমে নেহাতই কৌতুহল হলেও করোনা ও লকডাউন পরবর্তী পরিস্থিতিতে এটাকেই স্বাভাবিক বলে মনে করছিলেন সকলেই।
কীভাবে প্রকাশ্যে এল খবর
কিন্তু বেশ কিছুদিন দেখতে না পেয়ে কিছু একটা ঘটনার কথা আশঙ্কা করে সন্দেহ গাঢ় হতে থাকে। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই এলাকায়. পচা গন্ধ ছড়াতে থাকে। রাতে খোঁজ খবর করলেও তা বেশিদূর এগোয়নি। এদিন সকালেও হাওয়ার সঙ্গে দুর্গন্ধ গাঢ় হতে থাকে। দুর্গন্ধের উৎসস্থল কোথায় খুঁজতে গিয়ে তাঁরা লক্ষ্য করেন গন্ধ নীতিশবাবুর বাড়ি থেকেই আসছে।
প্রাথমিক খোঁজখবর শুরু করেন বাসিন্দারাই
ফলে এলাকার বাসিন্দারা আজকে তাদের খোঁজ খবর নিতে শুরু করেন। আর এই খোঁজ খবর নিতে গিয়েই প্রকাশ্যে এলো এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনার কথা জানিয়ে পুলিশে খবর দেয়। এরপরই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় চ্যাটার্জিরথানার পুলিশ।
পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২১/৩ ওলাবিবি তলা লেনের তিন তলার একটি ঘরে দুটি মৃতদেহ পড়ে ছিল। মৃতদের মধ্যে একজন পুরুষ, যাঁর নাম নীতিশরঞ্জন মন্ডল(৭৫) ও একজন মহিলা, অনিতা ঘোষ(৬০) । অনিতা ঘোষ হলেন নীতিশরঞ্জনবাবুর শ্যালিকা। আর এদের দুজনের মৃতদেহ আগলে বসে রয়েছেন নীতিশরঞ্জনের স্ত্রী পাপড়ি মন্ডল। পুলিশ দেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়। স্থানীয়দের বক্তব্য, হাওড়ার বুকে এই ঘটনা কলকাতার রবিনসন স্ট্রিটের ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। এই ঘটনায় এলাকাবাসী যথেষ্টই আতঙ্কিত।
মানসিক রোগের ইতিহাস রয়েছে পরিবারের
এই প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা অসীম মাঝি জানান এই পরিবার দীর্ঘদিন ধরে এখানে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। তাদের একমাত্র সন্তান দীর্ঘদিন ধরে মানসিক অসুখে ভুগছিল। সম্প্রতি তাকে চিকিৎসার জন্য অ্যাসাইলামে পাঠানো হয়। ইদানীং তাঁদের পরিবারের কাউকে দেখতে পাননি এলাকার মানুষ। আজ কৌতূহলবশতই তাদের খোঁজ খবর নিতে গেলে তারা দেখতে পান, তিন তলার ঘরে মৃত অবস্থায় দুজন পড়ে আছেন ও নিশীথবাবুর স্ত্রী দুজনের মৃতদেহ আগলে বসে আছেন।
মানসিক অবসাদ গ্রাস করে স্ত্রীকেও
মানসিক অবসাদ থেকেই এই ঘটনা ঘটেছে বলেই মনে করছেন এলাকাবাসী। যদিও এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। তবে দুজনের মৃত্যু কীভাবে হল তা এখনও উদ্ধার করা যায়নি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসা পর্যন্ত বিষয়টির পরিষ্কার ধারণা পাওয়া সম্ভব নয়।