২০২১ সালের বিধানসভায় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃতীয়বার সরকার গড়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। বাংলায় বাম ও কংগ্রেস কোনও আসন জিততে পারেনি। এবার তা পরিবর্তন হল। সাগরদিঘি উপ নির্বাচনে (Sagardighi Bypoll 2023) নিকটতম প্রার্থীকে প্রায় ২৩ হাজার ভোটে হারিয়ে জিতেছেন বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাস (Byron Biswas)।
উপ নির্বাচন হলেও সাগরদিঘির (Sagardighi Result) ফলাফল রাজ্য রাজনীতিতে তাত্পর্যপূর্ণ। তৃণমূলের তিন বারের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত সাহা মারা যাওয়ায় উপনির্বাচন হয় সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রে। বাম-কংগ্রেস জোট করে নির্বাচনে লড়াই করায় এ বার এই আসনে ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আত্মীয় দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। কংগ্রেস এই কেন্দ্রে প্রার্থী করেছিল বায়রন বিশ্বাসকে। জোট-রাজনীতির তত্ত্ব মেনে সাগরদিঘিতে কংগ্রেসকে সমর্থন করেছে বামেরা। অন্যদিকে, বিজেপি এই কেন্দ্রে দিলীপ সাহাকে প্রার্থী করেছিল।
কে এই বায়রন বিশ্বাস?
বায়রন বিশ্বাসের পরিবার বিড়ি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। বায়রনের বাবা বড় বিড়ি ব্যবসায়ী ছিলেন। পরে ব্যবসার হাল ধরেন বায়রন। এলাকায় তাঁর ও তাঁদের পরিবারের যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। তাই জয় নিশ্চিত হতেই ধুলিয়ানের বায়রন বিশ্বাসের বাড়ির সামনে অকাল হোলি পালন শুরু হয়। বাবরাবরই কংগ্রেস ঘনিষ্ট বায়রনের পরিবার। বায়রন নিজেও কংগ্রেস সাংসদ অধীন চৌধুরী ঘনিষ্ট। জেলার রাজনৈতিক মহলের কথায়, বাবার সুনাম ও অধীরের ঘনিষ্ট হওয়ার কারণেই বায়রনের উপরে ভরসা রাখে কংগ্রেস। সেই ভরসার প্রতি সুবিচার করেছেন তিনি।
ভোটের ফলের জন্য প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান বায়রন। তিনি বলেন, 'দাদা (অধীর চৌধুরী যেভাবে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাতেই আমরা অনেকটা এগিয়ে গিয়েছি। উনি বাড়ি বাড়ি গিয়ে আমার জন্য ভোট চেয়েছেন। বামেরাও সমস্ত শক্তি দিয়ে এখানে লড়েছে। আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করেছি। সেই ফল মিলেছে।'
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি বিধানসভা আসনে ৫০.৯৫ শতাংশ ভোট পেয়ে বিধায়ক হয়েছিলেন সুব্রত সাহা। দ্বিতীয় স্থান পেয়েছিলেন বিজেপির মাফুজা খাতুন। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ছিল ২৪.০৮ শতাংশ। ১৯.৪৫ শতাংশ ভোট পেয়ে তিন নম্বরে ছিলেন কংগ্রেসের হাসানুজ্জামান (বাপ্পা)।