'SIR হলে বাংলায় অন্তত ১ থেকে ১.২ কোটি নাম বাদ যাবে,' দাবি শান্তনু ঠাকুরের। মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার পাঁচপোতা এলাকায় এক বিজেপি কর্মীসভায় যোগ দেন তিনি।বলেন, 'যদি SIR হয়, তাহলে অন্তত ১ কোটি থেকে ১.২ কোটি নাম বাদ যাবে। বিজেপি এতে লাভবান হবে, আর তাতেই এই রাজ্যে সরকার বদল হবে।' কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ও বনগাঁর বিজেপি সাংসদের এই মন্তব্যে তোলপাড় রাজনৈতিক মহল।
শান্তনুর দাবি, বহু বছর ধরেই বাংলার ভোটার তালিকায় এমন নাম আছে, যাঁরা আসলে রোহিঙ্গা, অনুপ্রবেশকারী বা ‘ভূতুড়ে ভোটার’। তিনি বলেন, 'এইসব ভুয়ো ভোটারদের সরিয়ে দেওয়া গেলে সাধারণ মানুষই ভোট দিতে পারবেন। যাঁরা রাজ্যে শিল্প চান, ভাল শিক্ষা চান, উন্নত স্বাস্থ্যব্যবস্থা চান, সেই সাধারণ মানুষই ভোট দিয়ে বিজেপিকে জেতাবেন।'
সভা শেষে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে শান্তনু ঠাকুর বলেন, 'একটা স্বচ্ছ ভোটার তালিকা তৈরি করতে হবে। দেখতে হবে, কতজন রোহিঙ্গা বাদ পড়লেন, কতজন বাংলাদেশি বাদ পড়লেন, কতজন ভূতুড়ে ভোটার বাদ পড়লেন।'
তবে একইসঙ্গে তাঁর আশ্বাস, 'শরণার্থীদের কাউকেই বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে না।' তিনি বলেন, 'যাঁরা আশ্রয় নিয়েছেন এবং নাগরিকত্ব পেয়েছেন, তাঁরা ভোটার হিসেবেই থেকে যাবেন।'
শান্তনুর এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের রাজ্যসভার সাংসদ ও মতুয়া সম্প্রদায়ের নেত্রী মমতা বালা ঠাকুর বলেন, 'SIR হলে সবচেয়ে ক্ষতি হবে মতুয়া শরণার্থীদের। বিজেপির নিজের সমর্থকদের নামই বাদ যাবে। তৃণমূলের কিছুই ক্ষতি হবে না, উল্টে আমাদের আসন বাড়বে।'
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজ্য রাজনীতিতে মতুয়া ভোট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বনগাঁ ও আশপাশের অঞ্চলে এই সম্প্রদায়ের ভোটে যথেষ্ট প্রভাব পড়ে। ফলে শান্তনুর এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ফের রাজনৈতিক মহলে আলোচনা তুঙ্গে। সত্যিই কি SIR চালু হলে বিজেপি লাভবান হবে? নাকি উল্টে মতুয়াদের মধ্যেই বিভাজন তৈরি হবে? এই প্রশ্নগুলিই ভাবাচ্ছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।