
ছট পুজোর আবহে রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়াল আসানসোলে। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহার খোঁজে পোস্টার পড়তেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পোস্টারে লেখা 'আমাদের সাংসদ কোথায়? ছট পুজোয় দেখা মিলছে না কেন?' এমন বাক্য ঘিরে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা ও দলীয় দোষারোপের পালা।
তৃণমূলের অভিযোগ
আসানসোলের স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, বিজেপিই এই পোস্টার কাণ্ড ঘটিয়েছে। স্থানীয় ব্লক সভাপতি কাঞ্চন রায় বলেন, 'এটা বিজেপির সদস্যদের কাজ। রাজনৈতিকভাবে তারা আমাদের মোকাবিলা করতে পারছে না, তাই এই নোংরা রাজনীতির আশ্রয় নিচ্ছে। এত সস্তা কৌশল বিজেপির পুরনো অভ্যাস।'
বিজেপির পাল্টা জবাব
অন্যদিকে, অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে বিজেপি। তাদের বক্তব্য, এই পোস্টার আসলে তৃণমূলের ভেতরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। তবে সুযোগ হাতছাড়া না করে তৃণমূল সাংসদকে কটাক্ষ করেছেন আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। তিনি বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসানসোলকে এক জন প্রবাসী সাংসদ দিয়েছেন। যখন বিহার-উত্তরপ্রদেশ থেকে মানুষ ছট পুজো করতে আসছেন, তখন আমাদের সাংসদ কোথায়? শহরের মানুষ তাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে।'
তিনি আরও বলেন, 'যখন সাংসদ মানুষের আনন্দ-বেদনায় পাশে থাকেন না, তখন তার কাছ থেকে কী আশা করা যায়? এখন হয়তো ভবানী ভবনেই তাঁকে খুঁজতে যেতে হবে। অগ্নিমিত্রা পাল পাশাপাশি কীর্তি আজাদকেও কটাক্ষ করেন, যিনি সম্প্রতি রাজ্যের আরেকটি অপরাধমূলক ঘটনার সময়ে নীরব ছিলেন বলে দাবি করেন তিনি।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট:
শত্রুঘ্ন সিনহা প্রথমবার ২০২২ সালে আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন। বিজেপির অগ্নিমিত্রা পালকে প্রায় তিন লক্ষ ভোটে হারিয়ে। ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি ফের আসন ধরে রাখেন, যদিও এবার ব্যবধান অনেক কম, মাত্র ৫০ হাজার ভোটের।
ছট পুজোর সময় আসানসোল জুড়ে এই পোস্টার-রাজনীতি নিঃসন্দেহে শাসক ও বিরোধী শিবিরে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। কেউ বলছেন 'জনসংযোগের ঘাটতি', আবার কেউ দেখছেন 'রাজনৈতিক চক্রান্ত'। কিন্তু আপাতত প্রশ্ন একটাই, 'আসানসোলের সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা কোথায়?'